ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, বাংলাদেশসহ ৩ দেশে আঘাতের আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক:

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে যাচ্ছে। গতিমুখ অনুযায়ী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসলে ‘অশনি’ নামক এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে।

সোমবার (২১ মার্চ) প্রবল শক্তি নিয়ে এটি  আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড়ের কোনো বার্তা না দিলেও এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত গভীর নিম্নচাপটি ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে। রোববারের মধ্যে তা সুস্পষ্ট নিম্নচাপ হিসেবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। আর সোমবার সকালের মধ্যেই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়বে। তারপর উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে তা উত্তর মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাবে।

যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি কোনো প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে না। তবে শনিবার থেকেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বৃষ্টি শুরু হবে। রোববার তা আরো বাড়বে। আর সোমবার তা ভারী থেকে অতিভারী আকারে বর্ষিত হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। যে কারণে শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রও।

এজন্য শনিবার (১৯ মার্চ) থেকেই ভারতের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলোর তৎপরতাও আপাতত বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে, বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কাঁচাবাড়িতে যারা থাকেন, তাদেরকে ভারত সরকারের তরফ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আসন্ন জলোচ্ছ্বাসের জেরে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাস জানিয়েছেন, ১৫ মার্চ ভারত সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ধীরে ধীরে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বদিকে এগিয়ে ১৯ মার্চ সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরে লঘুচাপটি গভীর লঘুচাপে পরিণত হবে। ২০ মার্চ আনন্দাম নিকোবর দ্বীপের কাছাকাছি এসে পরিণত হবে নিম্নচাপে। আর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে ২১ মার্চ সকালে। ২২ মার্চ এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগুতে পারে। ২৩ মার্চ আরও উত্তর ও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে পৌঁছাতে পারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে।

বর্তমানে লঘুচাপের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠে যাচ্ছে ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. পর্যন্ত। এটি বাড়তে বাড়তে ২৩ মার্চ ৮০ কিলোমিটারে উঠে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) থেকেই সাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। ২৩ মার্চ প্রবল বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে অশনি (asani)। শ্রীলঙ্কার দেওয়া এই নামের অর্থ বাজ বা বজ্র।

সূত্র- আনন্দবাজার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)