সাতক্ষীরায় দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দিরের উদ্বোধন
রঘুনাথ খাঁঃ
শ্রী শ্রী গৌর পূর্ণিমা ও দোল উৎসব
২০২২ উপলক্ষে শ্রী শ্রী শ্রীমন চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দিরের উদ্বোধন করা
হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়িতে এ
মন্দিরের উদ্বোধন করেন জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের কেন্দ্রীয়
কমিটির সভাপতি ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ। পরে নাটমন্দির
প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ত¡ করেন জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের
সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি গোষ্ঠ বিহারী মণ্ডল। বক্তৃতা করেন জেলা
মন্দির সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক
রঘুজিৎ গুহ, ডাঃ সুশান্ত ঘোষ, অ্যাড. সোমনাথ ব্যাণার্জী,
অ্যাড. গোবিন্দ বল-ভ, নারায়ন সাধু, জিতেন্দ্রনাথ ঘোষ, অসীম
দাস সোনা, নিত্যানন্দ আমিন ও বিকাশ চন্দ্র দাশ।
বক্তারা বলেন, ১৪৮৬ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে এক ফাল্গুনী
পূর্ণিমা অর্থাৎ দোল পূর্ণিমার তিথির সন্ধ্যায় (বাংলা ১৪০৭
সালের ১২ ফাল্গুন) চন্দ্রগ্রহণের সময় নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন
বিশ্বম্ভর মিশ্র বা গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু। নিমগাছের তলায়
জন্মগ্রহণ করায় তার নাম রাখা হয় নিমাই। পরবর্তীতে তিনি
চৈতন্য মহাপ্রভু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিমাইয়ের বাবা
জগন্নাথ মিশ্রের আদি বাড়ি ছিল সিলেটের গোপালগঞ্জ
উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ গ্রামে। তার মায়ের নাম ছিল শচীদেবী। তার
সর্বশক্তি বীজ, গুণ, ক্ষমতা ও মন্ত্র ছিল “ আদি অন্ত নাহি যার- বেদ
এ অগোচর।”
শ্রীশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু ও তার প্রবর্তিত বৈষ্ণব মতবাদকে ঘিরে
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য প্রাণ লাভ করেছিল। বাংলায় জন্ম নেওয়া
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আগমন এক বিশেষ শক্তি যুগিয়েছিল।
গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুই প্রথম ব্যক্তি যিনি সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য
ভারতবর্ষে প্রথম আইন অমান্য করার সাহস দেখিয়েছিলেন।
গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু ৪৮ বছর এই ধরাধামে অবস্থান করেছিলেন। তার
জীবনের প্রথম ২৪ বছর তিনি নবদ্বীপে বাল্য ও গার্হস্থ্য লীলা।পরবর্তী ২৪ বছর জগন্নাথ, পুরী ও বৃন্দাবনসহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন
স্থানে হরিনাম প্রচার ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানী প্রচারে
অতিবাহিত করেন। এই সময়ে তিনি নিমাই থেকে শ্রীচৈতন্য
মহাপ্রভু নামে পরিচিত হতে থাকেন। তিনি কেবল গীতার বানী
প্রচার করে থেমে থামেননি। তিনি শ্রীমদ ভগবদগীতার মূল তত্ত¡ ও
সারকথা ব্যাবহারিকভাবে ভক্তদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
কলিযুগে পাপী তাপীদের উদ্ধারের মূলমন্ত্র “হরিনাম”কে তিনি
প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
আলোচনা সভার আগে মহাপ্রভু দর্শণ নামের একটি বই এর
মোড়ক উন্মোচন করা হয়।