রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আতঙ্ক এখন নারী অস্ত্রধারীরা
নিউজ ডেস্কঃ
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে বাড়ছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। সেই সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্ক। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সশস্ত্র গ্রুপে এবার যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী। আরসা সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা নারীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। অস্ত্র চালনায় তাদের প্রশিক্ষিতও করছে।
ঐ নারীরাই এখন ইয়াবা, মাদক-মানবপাচার, স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, অপহরণের পর মুক্তিপণ বাণিজ্য, রোহিঙ্গা কল্যাণ ফান্ডের নামে মাসিক চাঁদা আদায়, সালিশ বাণিজ্য, বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা আদায় করছেন। অনুসন্ধান ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আরো জানা গেছে, সশস্ত্র রোহিঙ্গারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের (নারী ও পুরুষ) অস্তিত্ব জাহির করতে ছবি দিয়ে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। সম্প্রতি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮ নম্বর ব্লক এর বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের মেয়ে আনোয়ারা বেগমের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। আনোয়ারা বেগম ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষিত হয়েছেন বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, ক্যাম্প-১৫, ব্লক-জি-২ এর মৌলভী নুরুল আলমের ছেলে মো. নোমান, বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তের কাঁটাতার লাগোয়া ঘুমধুমের জিরো পয়েন্টের দিল মোহাম্মদ ও মৌলভী আরাফাত আহমদ সোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তারা জিরো পয়েন্ট কেন্দ্রিক ইয়াবা, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালানেরও অন্যতম হোতা। তাদের নিয়ন্ত্রণে জিরো পয়েন্টের সব অপকর্ম চলছে।
ক্যাম্প-৩ ব্লক-এ, এ/৩১, শেড এর মাঝি মো. ছিদ্দিক, হেড মাঝি নুর মোহাম্মদের ব্লকের আব্দুর রহিমের ছেলে হাফেজ মো. আলম, ক্যাম্প-৮ এর হেড মাঝি ইয়াছিন আরসার সক্রিয় সদস্য। তাদের মধ্যে ইয়াছিন অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলে রয়েছেন। কিন্তু তার গ্রুপের সদস্যরা নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
কয়েকজন রোহিঙ্গা বলেন, ইয়াবা, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালানের ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ এবং সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে গোপনে উত্তোলিত চাঁদার টাকায় ইয়াছিনকে জামিনে মুক্ত করতে মোটা টাকার তহবিল গঠন করছে ক্যাম্পে থাকা আরসা সদস্যরা।
এ ব্যাপারে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক এসপি মো. নাইমুল হক জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কোনো গ্রুপ থাকতে পারবে না। এপিবিএন সদস্যরা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ২২০ জন আরসা সদস্যসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত প্রায় ৯শ’ রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীকে গ্রেফতার করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শরণার্থী ক্যাম্পে অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।