ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সুবাহ আমার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছে: ইলিয়াস
বিনোদন ডেস্ক:
গায়ক ইলিয়াস হোসাইনকে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করতে বাধ্য করেন মডেল ও অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা সুবাহ। তবে বিয়ের পরেও সেই রেশ কাটেনি। সুবাহ তাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ গায়কের। ফলে তাদের সংসার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এক মাস হতে না হতেই সেই সংসারে বিচ্ছেদের সুর বাজে। শুরু হয় কাদা-ছোড়াছুড়ি।
এর প্রেক্ষিতে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ইলিয়াস প্রথমে চুপ থাকলেও এবার পদক্ষেপ নিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫,২৬,২৯,৩৫ ধারায় সুবাহর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে।
এদিকে বিয়ের আগের ঘটনা প্রসঙ্গে মামলার কপিতে ইলিয়াস উল্লেখ করেন, হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে ইলিয়াসকে প্রথম দেখেন সুবাহ। তাকে দেখতে সাবেক প্রেমিক ক্রিকেটার নাসিরের মতো মনে হয় নায়িকার। সুবাহ নিজেই ইলিয়াসের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন এবং নিজেকে নায়িকা হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর ইলিয়াসের সঙ্গে থাকা বন্ধুর কাছ থেকে এই গায়কের ফোন নম্বর নেন তিনি। রাতে বাসায় ফিরে তাকে ফোন দেন সুবাহ। এক পর্যায়ে ইলিয়াস তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলে সুবাহ ইলিয়াসের বন্ধুকে ফোন দেন। সেই বন্ধুর মাধ্যমে ইলিয়াসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ইলিয়াসকে নিজের বাসায় যেতে বাধ্য করেন সুবাহ।
ইলিয়াস জানান, সুবাহর বাসায় যাওয়ার পর ‘জল জিরা’র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সে আমাকে খাওয়ায়। আমি বেহুঁশ হয়ে পড়লে আমাকে উলঙ্গ করে এবং সে নিজেও অর্ধনগ্ন হয়ে অন্তরঙ্গ ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করে। এমনকি আমি অজ্ঞান থাকা অবস্থায় সে আমার ফোন থেকে স্ত্রী কারিন নাজ, পরিবারের সদস্য ও ফোনবুকে থাকা ২০-৩০ জনের নম্বর নিয়েছে। এরপর সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে আমার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তার এমনকাণ্ডে আমি ভয় পায় এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।
তিনি আরো জানান, সুবাহর দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় আমি চুপ থাকি। নিরুপায় হয়ে আমি তাকে অনুরোধ করি, এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই, ধার করে ৫ লাখ টাকা দিতে পারি। এ অনুরোধ শুনে সুবাহ জানায়, আমার টাকা দেওয়ার দরকার নেই। বিনিময়ে তাকে আমার বিয়ে করতে হবে। তার এই প্রস্তাবে রাজি না হলে সে আমার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিতে চায়।বাধ্য হয়েই বিয়ে করি।
বিয়ের পরের কথা জানিয়ে গায়ক বলেন, বিয়ের পরদিনই সুবাহ জানায় তার বাসার ৩ মাসের ভাড়া বাকি। স্বামী হিসেবে আমাকে বাসার ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। তার চাপে আমি সেটা পরিশোধ করি। দিনকে দিন সুবাহর চাহিদা বাড়তেই থাকে। ঢাকায় তার স্থায়ী ঠিকানা নেই জানিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ও একটি হ্যারিয়ার গাড়ি কিনে দিতে চাপ দেয়। ব্যবসার অবস্থা ভালো নেই জানিয়ে আমি বিষয়টি এড়িয়ে যাই। পরবর্তীতে সে গুলশানে একটি স্পা সেন্টার খুলে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। আমি বুঝতে পারি, সুবাহ পরিকল্পনা মোতাবেক আমার কাছ থেকে ফ্ল্যাট, গাড়িসহ আরও বড় কিছু হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ফাঁদে ফেলেছে।
নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে ইলিয়াস বলেন, সুবাহ আমাকে মারধর করত। এমনকি সে নিজের গায়েও আঘাত করে ফেসবুক লাইভে এসে আমার ওপর দোষ দিত। আমার স্ত্রীকে (কারিন নাজ) ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ দিত। আমার দিক থেকে সাড়া না পেয়ে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিত।