সাতক্ষীরায় সন্তানকে  কিডনি দিলো মা, চিকিৎসা ব্যয় মিলছে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আকষ্মিক অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক জানিয়ে দেন শরীরে দুটি কিডনী নষ্ট হয়ে গেছে রুবেল মোল্লার। দ্রুত কিডনী প্রতিস্থাপন প্রয়োজন, না হলে মৃত্যু নিশ্চিত। অভাবের সংসারে হঠাতই যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। সাত মাস আগে এমন খবরে দ্রুত রুবেল মোল্লাকে নেওয়া হয় রাজধানীর শ্যামলী সিকেডি ইউরোলজি হাসপাতালে। এখানো সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে সে।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) টানা ১০ ঘন্টা অপারেশনের পর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ছেলেটির। কিডনি দান করেছেন মা আনোয়ারা বেগম। তবে কিডনি প্রতিস্থাপন হলেও এখন চিকিৎসা ব্যয় মিলছে না। এখনো ৩-৬ মাস সেখানে চিকিৎসাধীন থাকতে হবে তার।
রুবেল মোল্লা (২৫) সাতক্ষীরার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের দিনমজুর মুজিবর মোল্লার একমাত্র ছেলে। মাঝিয়াড়া বাজারের ছোট্ট দোকানের পোল্ট্রি মাংসের ব্যবসায়ী। দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তার।
খুলনার চিকিৎসকের পরামর্শে রুবেল মোল্লাকে চিকিৎসার জন্য ২০২১ সালের ২০ জুলাই ভর্তি করা হয় রাজধানীর শ্যামলী সিকেডি ইউরোলজি হাসপাতালে। টানা সাত মাস চিকিৎসাধীন রেখে কিডনি প্রতিস্থাপন উপযোগী করা হয় রুবেলকে।
সমাজসেবার মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ৫০ হাজার টাকাসহ হৃদয়বান বিভিন্ন মানুষ এখন পর্যন্ত সহায়তা দিয়েছেন আড়াই লাখ টাকা, তালার বেসরকারি সংস্থা মানবউন্নয়ন ফাউন্ডেশানের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম নজরুল ইসলাম, পরিচালক নিগার সুলতানা রেকছোনা দিয়েছেন ১০ লাখ টাকা।হৃদয়বান মানুষদের দেওয়া টাকায় চিকিৎসা চলছে অসহায় পরিবারের ছেলেটির।
রুবেল মোল্লার বাবা মজিবার মোল্লা জানান, ছেলেকে নিয়ে টানা সাত মাস ঢাকাতে রয়েছি। আমার এমনিতেই কিছুই নেই। সর্বস্ব যা ছিল সেটুকুও শেষ করে ফেলেছি অনেক আগেই। হৃদয়বান মানুষদের দেওয়া টাকায় চিকিৎসা চলছে। এখন পর্যন্ত ১২ লাখের বেশী টাকা খরচ হয়েছে। কিডনি দান করেছেন স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। চিকিৎসক বলেছেন, এখনো ৩-৬ মাস থাকতে হবে এখানে। সব মিলিয়ে এখনো ৮-১০ লাখ টাকা লাগবে। হৃদয়বান মানুষদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
রুবেলের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে। হঠাৎই জানা গেল দুটি
কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একটি কিডনি আমি দান করবো।
যাতে ছেলেটা দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে পারে। তবে কিডনি দান করতে গেলেও আনুসঙ্গিক চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অনেকট টাকার প্রয়োজন। ছেলের সঙ্গে আমারও চিকিৎসা চলেছে টানা সাতমাস। আমি একটি কিডনি দিয়েছি। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে এখনো টাকা প্রয়োজন। আপনারা সহযোগিতা করুন।
তালা সদরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম নজরুল ইসলাম বলেন, ছেলেটার দুটি
কিডনি নষ্ট। অনেক ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা। সিকেডি ইউরোলজি হাসপাতালে টানা সাত
মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) টানা ৯-১০ ঘন্টা অপারেশনের পর কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন হাসপাতালের পরিচালক কিডনি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলামসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।
তিনি বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনো টানা ৩-৬ মাস চিকিৎসাধীন থাকতে হবে
সেখানে। বর্তমানে রুবেল মোল্লা আইসিইউতে রয়েছে। মানবউন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে এখনো অনেক টাকার প্রয়োজন। হৃদয়বান মানুষরা পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে পারেন।
পরিবারটির পাশে কেউ দাঁড়াতে চাইলে যোগাযোগ করা যাবে এই নম্বরে ০১৯৮৮৯৬৯৭৭৭ (রুবেল মোল্লা)।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)