পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস আজ
নিউজ ডেস্কঃ
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার। তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যাযজ্ঞের ১৩ বছর পূর্তি, শোকাবহ পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস।
২০০৯ সালের এ দিনে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বিপথগামী সৈনিকরা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
দিবসটি পালন করতে বিজিবি ও সেনাবাহিনী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফেরাত কামনায় পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কোরআন, বিজিবি’র সকল মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বিজিবি’র সকল স্থাপনায় বিজিবি পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং বিজিবি’র সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করবে। এছাড়া বিজিবি’র সকল সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার বাদ জুম্মা পিলখানাস্থ বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বিজিবি হাসপাতাল মসজিদে শহীদ ব্যক্তিবর্গের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, শহীদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়গণ, পিলখানায় কর্মরত সকল অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবীর সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অংশগ্রহণ করবেন।
পিলখানা ট্র্যাজেডির এই ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। এছাড়া বিজিবি’র নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলায় সারাদেশে ৫ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে।
২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরো ২৬ জনকে আসামি করা হয়।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর লালবাগে অবস্থিত আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ হত্যা মামলার রায় দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে ৮৫০ জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২৭১ জনকে খালাস দেওয়া হয়। ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২৬৬ জনকে।
২০১৭ সালের ২৭শে নভেম্বর হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখা হয়। আট জনের মৃত্যুদন্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চার জনকে খালাস দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে আপিল চলার সময়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। খালাস পান ১২ আসামি।
এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এখনো বিচারাধীন। মামলাটির আসামি রয়েছেন ৮৩৪ জন। এর মধ্যে ২৪ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন। পলাতক ২০ জন।