সাতক্ষীরায় আম বাগানগুলো ভরে গেছে মুকুলে!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বসন্তের বাতাসে দোল খাচ্ছে আমের মুকুল আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। দলে দলে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছি। মৌমাছির গুঞ্জন মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত। উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরায় আম বাগানগুলো ভরে গেছে মুকুলে। বাগানগুলোতে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছে চাষীরা।

এ কারণেই আশায় বুক বেধে শুরু করেছেন সকাল বিকাল পরিচর্যা। সাতক্ষীরা জেলার সদর, তালা, পাটকেলঘাটা, কলারোয়া, আশাশুনি, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, শ্যামনগরসহ সাতটি উপজেলায় রয়েছে আমবাগান। আম চাষে লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই জেলায় আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে ছোট বড় নতুন নতুন আমবাগান সেখান চাষ করা হচ্ছে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালীসহ বিভিন্ন জাতের আম। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশের অন্য সব জেলা থেকে ২০-২৫ দিন আগেই পাকে সাতক্ষীরার আম। এ জেলার আমের কদর রয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

২০১৬ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম প্রথম ইতালী, ইংল্যান্ড ও জার্মানীসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আমের মুকুলে ভরে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময় মতো পরিচর্যা করলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। কৃষকরা আম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার নুরুল আমিন বলেন, এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছিলো এতে অন্য ফসলের ক্ষতি হলেও আমের জন্য আশীর্বাদ। তবে আগামী কয়েকদিন যদি ঘন কুয়াশা না পরে এভাবে চলতে থাকে তাহলে আমের ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি। বাগানবাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, গাছের পরিচর্যা করার কারণে আমের ভালো ফলন পাওয়া যায়। সে কারণে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে থেকে কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছিলাম। এর ফলে হপার পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এবং আমের মুকুল ও খুব ভালো এসেছে এতে আমরা খুশি।

ফল ব্যবসায়ী আশরাফ  বলেন, আমি প্রতি বছর মুকুল আসার সাথে সাথে বাগান ক্রয় করে আমের ব্যবসা করি। এ বছর ৫লক্ষ টাকা ছোট বড় ১৩টি বাগান ক্রয় করেছি। আশা করি আগামীতে কুয়াশা ও বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি না হয় তাহলে লাভবান হবো।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি যদি কোন প্রকৃতিক দূযোগ না হয় তাহলে কৃষক লাভবান হবে। বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য কাজ করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর করোনা মহামারির কারনে অল্প পরিসরে গোবিন্দভোগ আম বিদেশে পাঠানো হয়েছিলো। এছাড়া ঢাকার আগোরা সহ বড় বড় সুপার শপগুলোতে ভালো দামে সাতক্ষীরা আম বিক্রয় হয়েছিলো। বিদেশে রপ্তানি করার জন্য আমরা বাগান প্রস্তুত করা হয়েছে। বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য প্রায় জেলার ৫০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে এ বছর জেলার ৪ হাজার ১১৫হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)