ঘোজাডাঙ্গায় সিরিয়ালের নামে হয়রানী ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় ভোমরা স্থলবন্দরে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালিত
আসাদুজ্জামান ঃ
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় পন্যবাহী ট্রাক সিরিয়ালের নামে হয়রানী ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় কর্মবিরতি, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ড এফ অ্যাসোসিয়েশনসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন। রবিবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা ৩ঘন্টা ব্যাপী উক্ত কর্মসুচি পালিত হয়। এই সময়ে বন্দরে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী নেতা রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, মিজানুর রহমান, আমীর হামজা, আবু মুসা, রায়হানুল ইসলাম টুকু, হাদিউজ্জামান বাদশা, হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের তরিকুলইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা এ সময় বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ ভারতীয় পন্যবাহী গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভোমরার বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরের বেসরকারি পার্কিং ইয়ার্ডে সিরিয়ালের নামে বিভিন্ন পন্য বিবেচনায় গাড়ি প্রতি ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। না দিলে তাদেরকে ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়। যারা এই চাঁদা পরিশোধ করে তারা অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশের ভোমরা বন্দরে আসতেপারে। ব্যবসায়ী নেতারা আরও বলেন, এই চাঁদাবাজি ও সময়ক্ষেপনের কারণে বাংলাদেশে আমদানিকৃত পন্যের মূল্য অপেক্ষাকৃত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া পঁচনশীল পন্যও ক্ষতির মুখে পড়ছে। এতে ব্যবসায়ী মহলসহ ক্রেতা সাধারন মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেক আমদানিকারক ঘোজাডাঙ্গা বন্দর ত্যাগ করে ভারতের অন্য কোন বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করছে। এরফলে ভোমরা স্থল বন্দরে রাজস্ব ঘাটতিও দেখাদিচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন,সমস্যার সমাধানের জন্য ব্যবসায়ী নেতারা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যেতেবাধ্য হচ্ছি। তারা এ সময় ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় সিরিয়ালের নামে পন্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে তারা আগামীতে আরো বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে ঘোষনা দেন। একইসাথে তারা আগামীকাল সোমবার ৪ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানান। ভোমরা স্থলবন্দরের ৮টি সংগঠন এই আন্দোলন ও কর্মসূচির সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেছেন। এদিকে, গতকাল শনিবার (২৯ জানুয়ারী) প্রথম দিনের কর্মসূচির পর ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় চাঁদা দিয়ে ভোমরা বন্দরে প্রবেশকৃত ৫৩টি পন্যবাহী ট্রাকের মালামাল খালাস করেনি শ্রমিকরা। আটকা পড়ে রয়েছে এসমস্ত ট্রাকগুলো।
উল্লেখ্য, ভোমরা বন্দরের বিপরিতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় পন্যবাহী ট্রাকে সিরিয়ালের নামে দৈনিক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। আমদানিকারকরা হিমশিম খাওয়ায় চাঁদাবাজির হাত থেকে রক্ষা পেতে ভোমরা বন্দরের এসব সংগঠন এই আন্দোলনে নেমেছে।