হোটেল ব্যবসায়ী ও নারী কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে অংশীদার হোটেল ব্যবসায়ি বাবা ও ছেলে
আসাদুজ্জামান:
সাতক্ষীরা জজ কোর্ট চত্বরে হোটেল ব্যবসায়ি দুই অংশীদারের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে মালামাল চুরির অভিযোগ এনে বটি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে ওই হোটেলের নারী কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে সাতক্ষীরা জজ কোর্ট চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, সাতক্ষীরা শহরের ঝুটিতলার মাওলা বক্স মোল্লার ছেলে আনারুল ইসলাম (৩৮) ও মাছখোলা গ্রামের মৃত গোলাম বারী ওরফে খোকনের স্ত্রী মঞ্জিলা খাতুন (২৫)।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনারুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ আট বছর ধরে তিনি শহরের মুনজিতপুরের তাজুল সরদারের ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে যৌথভাবে জজ কোর্ট চত্বরে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি হোটেলের রান্না ঘরে অবস্থান করাকালিন নজরুল ইসলাম তাকে চুরি করে মালামাল বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি এর প্রতিবাদ করার একপর্যায়ে নজরুল ইসলাম তাকে মারটিপ শুরু করেন। একপর্যায়ে নজরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী রান্না করার বটি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে হোটল কর্মী মঞ্জিলার মাথায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে মেহেদী। এ সময় আদালতে কর্মরত কয়েকজন আইনজীবী সহকারি ও আইনজীবী তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
নারী কর্মী মঞ্জিলা খ্তাুন জানান, প্রতিদিন ২৫০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে তিনি আদালত চত্বরের নজরুল ইসলাম ও আনারুল ইসলামের যৌথ মালিকানাধীন হোটেলে কাজ করে থাকেন। বুধবার সোয়া নয়টার দিকে আনারুলকে মেহেদী ও নজরুল ইসলাম বটি দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করার সময় তিনি তার জীবন বাঁচাতে গেলে তাকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। অপর নারী কর্মী লায়লী তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে সেও আহত হয়। নারী কর্মীদের সঙ্গে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন মঞ্জিলা।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারিসহ কয়েকজন নারী জানান, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার হোটেলের নারী কর্মচারিদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। তার লালসার শিকার হয়ে অনেকেই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। তারা অসহায় হয়ে কাজ করতে আসায় প্রভাবশালী ওই নজরুলের বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করতে পারেননি।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতলের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ পারভিন আক্তার জানান, আনারুল ইসলামের বাম চোখ, মাথা, মুখ, হাত ও শরীরের বিভন্ন অংশে ধারালো ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। একইভাবে ধারালো ও ভারী অস্ত্র দিয়ে মঞ্জিলা খাতুনের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তার একবার বমি হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ব্যাপারে নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবীর জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।