চীনের সহায়তায় ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চীনের সহায়তা নিয়ে সৌদি আরব নিজেরাই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে বলে অনুমান করছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সৌদি আরব তাদের ব্যালিস্টিক মিসাইলের কর্মসূচি এগিয়ে নিতে চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি অবশ্য ২০১৯ সালেই এক প্রতিবেদনে একই তথ্য দিয়েছিল। সে সময় তারা দাবি করেছিল, সৌদি আরব ক্ষেপণাস্ত্র মজুদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
দুই বছর আগের সেই প্রতিবেদন প্রকাশের ঠিক আড়াই বছর পর গতকাল এই বিষয়ে ফের আরেকটি প্রতিবেদন করল সিএনএন। নতুন প্রতিবেদনে সিএনএন বলেছে, উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিগুলোতে দেখা গেছে, সৌদি আরব তাদের ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছে এবং এসব মিসাইলের সক্ষমতা পরীক্ষার জন্য টেস্টিং সাইটও তৈরি করেছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির খবর সত্যি হলে তা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে এবং সৌদিদের শীর্ষ আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্খাকে রোধ করার জন্য বাইডেন প্রশাসনের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্য আরব দেশগুলো ইরানের এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও চাপ প্রয়োগের নীতি অবলম্বন করেছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদেরকে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে একাধিকবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির লেনদেনের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সর্বশেষ মূল্যায়ন সম্বন্ধে অবগত দুটি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে রিয়াদ সত্যি সত্যি নিজেরা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানো শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্য স্থিতিশীল রাখার যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ইসরায়েল ও সৌদি আরবকেও যুক্ত করা লাগবে, বলেছেন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ এবং মিডেলবুরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক জেফরি লুইস।
চীনের সহযোগিতায় সৌদি আরবের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্কে তিক্ততা আরও বাড়াবে বলেও অনুমান বিশ্লেষকদের।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল ও সিআইএ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে সংবেদনশীল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির আদানপ্রদান হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন, চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ রয়েছে। দুই দেশ সামরিক বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্কও বিদ্যমান।
“এই ধরনের সহযোগিতা কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে না এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তারে জড়িত নয়,” বিবৃতিতে বলেছে তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলেও সৌদি সরকার এবং ওয়াশিংটনে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে সিএনএন।