শার্শায় সন্তান প্রসবের ৬ ঘন্টা পর হাসপাতালে বসেই পরীক্ষায় অংশ নিলেন নারী পরীক্ষার্থী

আঃজলিল, যশোরঃ
যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ায় ফাতেমা খাতুন নামে এক নারী পরীক্ষার্থী ২১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্তান প্রসবের মাত্র ৬ ঘন্টা পর হাসপাতালের বিছানায় বসেই উচ্চ মাধ্যমিক (এইসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
এবং বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওই পরীক্ষার্থী দ্বিতীয় দিনের মতোও বাগআঁচড়ার একটি হাসপাতালের বেডে বসে এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
ফাতেমা বেনাপোল পোর্ট থানাধীন বালুন্ডা গ্রামের হাসানুজ্জামানের স্ত্রী এবং শার্শার রাঘবপুর গ্রামের আজগর মোল্লার মেয়ে।
জানাগেছে, ফাতেমা উপজেলার বাগআঁচড়া আফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে এবারের এইসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। এর আগে তার গর্ভে আসে সন্তান। তিনি আশা করেছিলেন সন্তান প্রসবের আগেই  হয়তো পরীক্ষা শেষ করে ফেলতে পারবেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যেই প্রসবের ব্যথা উঠলে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং সেদিনই সকালেই তার পরীক্ষা ছিল। এবং  তিনি সন্তান প্রসব করেন এবং তার ৬ ঘণ্টার মধ্যেই পরীক্ষা শুরু হলে কতৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে তিনি হাসপাতালের বেডেই পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখতে শুরু করে দেন।
পরীক্ষার্থী ফাতেমা জানান, গর্ভকালীন অবস্থায় পড়ালেখা করতে তার তেমন অসুবিধা হয়নি। তবে তার জীবনের এরকম একটি ঘটনার কারণে এবারের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া থেকেও তিনি বিরত থাকতে চাননি। তাহলে তাকে আরো একটা বছর অপেক্ষা করতে হতো।পরীক্ষায় বসার জন্যে তিনি খুব উদগ্রীব ছিলেন। বাচ্চা জন্ম দেওয়াটা খুব একটা কঠিন ছিল না।তিনি খুব খুশি যে পরীক্ষা ভাল হয়েছে। একই সাথে তার নবজাতক শিশুটিও ভাল আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপালের বেডে হেলান দিয়ে বসে তিনি পরীক্ষার উত্তর লিখছেন। এ সময় একজন ম্যাডাম পাহারা দিচ্ছেন। এবং হাসপাতালের বাইরে পুলিশ ডিউটিতে আছেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবার তিনি দুইটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন-ভুগোল ১ম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র।
তার স্বামী হাসান জানান, এরকম অবস্থায় স্ত্রীর কলেজ কতৃপক্ষ যাতে হাসপাতালেই পরীক্ষা দিতে পারেন সে ব্যবস্থা করে সেজন্যে কলেজ কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন।
বাগআঁচড়া আফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজর অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম জানান, এবার আমার ছেলে পরীক্ষার্থী হওয়াও আমি পরীক্ষার পরিচলনার দায়িত্বে নেই। পরীক্ষা পরিচালনা করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহাদয়ের প্রতিনিধি। তবে এ বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই সন্তান জন্ম দানকারী শিক্ষর্থীকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করায় কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম নুরুজ্জামান জানান, ঘটনা সত্য। শিক্ষার্থী সন্তান জন্মদান করেছেন গত মঙ্গলবার ভোরে। আর সে যেন হাসপাতালের বেড এ পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য কলেজ কতৃপক্ষের একটি আবেদন পাই এবং তার পরীক্ষা দেয়ার যাথাযথ ব্যবস্থা করি।হাসপাতালের বেডেই তার পরীক্ষা সেন্টার করে তাকে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলে তিনি জানান।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)