বিবাহিত ছাত্রীদের সিট নিয়ে ঢাবির সিদ্ধান্ত বাতিলে আইনি নোটিশ
নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে বিবাহিত এবং অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের সিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ঢাবির আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ঢাবি কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে সিদ্ধান্ত বাতিলে ঢাবি উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, সামসুন্নাহার হল, কুয়েত-মৈত্রী হল ও সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্টকে তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে শিশির মনির বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, ঢাবির কয়েকটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার কারণে কতিপয় ছাত্রীর আবাসিক সিট বাতিল করা হয়েছে। সামসুন্নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও অন্যান্য শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ১৬ নং বিধিতে বলা হয়েছে ‘কোন ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবে। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে, বিবাহিত, ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবে না। ’
এ বিধানের ফলে বিবাহিত শিক্ষার্থীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে।
নোটিশে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) ও (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করবে। বিবাহিত ছাত্রীদের জন্যে এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে প্রতিবন্ধকতা এবং সংবিধানের ২৭ এবং ২৮ নং অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
তাই এ নোটিশ পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবো বলে আইনজীবী শিশির মনির নোটিশে উল্লেখ করেছেন।