কালিগঞ্জে নারী নির্যাতন নির্মূল-করনে ব্র্যাক কর্তৃক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন
নিজস্ব প্রতিনিধি :
“নারী নির্যাতন বন্ধ করি, কমলা রঙের বিশ্ব গড়ি।” স্লোগানকে সামনে রেখে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে এক মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ০৭-১২-২০২১ তারিখ সোমবার সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ব্র্যাক অফিসের সামনে শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ এনামুল হকের সভাপতিত্বে সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২১ এবং নারী নির্যাতন নির্মূল করনে ১৬ দিন ব্যাপী(২৫শে নভেম্বরে -১০ ডিসেম্বর) প্রচারাভিযান ২০২১ উপলক্ষে মানববন্ধন, র্যার্ল্যী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক ক্ষমতায় ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির জেলা ব্যবস্থাপক মোঃ হুমায়ন কবীর মন্ডল,উপজেলা ম্যানেজার ইফতিখার হোসেন,হাবিবুর রহমান এ্যাসোসিয়েট অফিসার (সেলপ) প্রমুখ।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ব্র্যাক সর্বদা সচেষ্ট ও সজাগ। নির্যাতিত নারীদের সামাজিক সকল সুবিধা নিশ্চিত করা সহ সকল প্রকার আইনি সহায়তা করা হবে। তাছাড়া এই কর্মসূচির প্রতিপাদ্য বাস্তবায়ন করতে ব্র্যাক স্বর্বচ্চ চেষ্টা করবেন।
এসময় বক্তারা জাতিসংঘের এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন , প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন নারী তাদের জীবনে নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারি, মানবিক সংকট, সংঘাত ও জলবায়ু বিপর্যয়সহ সংকটের সময় এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত ২০১১ সালের জরিপ মতে, শতকরা ৮৭ ভাগ নারী স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।
দিবসটি পালনের ইতিহাস সম্পর্কে বক্তারা বলেন, এই দিবস পালনের পেছনে রয়েছে এক হৃদয়-স্পর্শী ঘটনা। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর লাতিন আমেরিকার দেশ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন করতে গেলে প্যাট্রিয়া, মারিয়া তেরেসা ও মিনার্ভা মিরাবেল নামের তিন বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের স্মরণে ১৯৮১ সাল থেকে এই দিনটি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়।
উল্লেখ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদযাপন কমিটি ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস ও পক্ষ পালন করছে।
এই দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপনে নানা কর্মসূচি নেয়। এ বছরও এ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নারী নির্যাতন বন্ধ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে