এদিন সাতক্ষীরায় ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা
ডেস্ক রিপোর্ট:
আজ ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের একের পর এক গুপ্ত হামলায় টিকতে না পেরে পাকিস্তানি সেনারা সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ওই দিন মুক্তিযোদ্ধারা ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে ঢোকেন। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। দিবসটি উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু জানান, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে স্বাধীনতাবিরোধীরা গুলি চালায়। শহিদ হন আবদুর রাজ্জাক। সেখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার আন্দোলন। সে সময় মুক্তিযুদ্ধের খরচাদি বহনের জন্য সাতক্ষীরা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র লুট আর ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অলংকার, টাকা-পয়সা লুটের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের যোদ্ধারা ৮ ও ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে থেকে ভারতের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ১৯৭১ সালের ২৭ মে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ শুরু করেন। ওই যুদ্ধে দুই শতাধিক পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধে শহিদ হন তিনজন মুক্তিযোদ্ধা। এরপর থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা শুরু হয়।
এসব যুদ্ধে শহিদ হন ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ৩০ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দেওয়া। রাতের আঁধারে চলত গুপ্ত হামলা। একের পর এক হামলায় ভীত হয়ে পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বিনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়।
মশু আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরার অনেক বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণ করা হয়নি। সাতক্ষীরার অনেক মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। এখনো সাতক্ষীরার কোথাও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।