জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টি ঝরছেই
নিউজ ডেস্কঃ
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে আগে থেকেই ছিল পূর্বাভাস। সে অনুযায়ী গতকালের মতো আজও সকালে রাজধানীতে ঝরছে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। আর অসময়ের একটানা বৃষ্টিতে অফিসমুখী যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। বৃষ্টির এ একটানা বিড়ম্বনার পাশপাশি নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাসের সংকট।
সোমবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাসস্ট্যান্ডেই দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীদের ভিড়। সঙ্গে রয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও। তবে সে অনুযায়ী সড়কে গণপরিবহন তেমন একটা দেখা যায়নি।
এয়ারপোর্ট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয় অফিসগামী সাব্বির আহম্মেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। সৈনিক ক্লাবে যাব। এ রুটে খুবই কম বাস মিলছে। আর যাও দু-একটা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যাচ্ছে। ঠেলাঠেলি করেও দু-একটা বাসে উঠতে ব্যর্থ হয়েছি।
খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষারত সিয়াম হোসেন নামের একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর যেতে হবে। পরীক্ষার কেন্দ্র সেখানেই। তবে এ রুটে তেমন একটা বাস মিলছে না।
এ প্রসঙ্গে বনানী পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টির কারণে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম মনে হচ্ছে। এছাড়া ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিরুদ্ধেও সরকার নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এসব কারণেও গাড়ির সংখ্যা কম হতে পারে।
এদিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে।
এর প্রভাবে আজ সোমবারও দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি ঝরতে পারে। কাল মঙ্গলবার থেকে কমতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এরপর থেকে তাপমাত্রা কমবে আর শীত বাড়বে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার দুপুরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। এরপর সন্ধ্যায় তা নিম্নচাপে পরিণত হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
নিম্নচাপটি গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার, মোংলা বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৪৪ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
এ নিম্নচাপের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ বৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায়; রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকার কথাও বলেছে আবহাওয়া অফিস।