তালার শিরাশুনি দাখিল মাদ্রসার সুপারের অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদে ও তার উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন
প্রেস:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শিরাশুনি দাখিল মাদ্রসার সুপার সিরাজুল ইসলামের অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদে ও তার উপযুক্ত শাস্তির
দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২ টায়
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের
আয়োজন করেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেতু’র পরিচালক ও মাদ্রাসাটির সাবেক
সভাপতি মো. আবুল হোসেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি শিরাশুনি দাাখিল মাদ্রাসার সভাপতি
হিসেবে দুই দফায় বিগত ৩০.০৮.২০১২ সাল থেকে গত ০১.০৪.২০১৩ সাল পর্যন্ত
দায়িত্বে ছিলাম। এর পর থেকে গত আট বছর যাবত আমি ওই মাদ্রাসার সভাপতি
নই। এমনকি এই দীর্ঘ সময়কালের মধ্যে কোনো পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনও করা হয়নি।
তা সত্ত্বেও মাদ্রাসার সুপার সিরাজুল ইসলাম বারবার ভুয়া কমিটি দেখিয়ে
তারিখ ঘষামাজা করে বিগত ৩১.১২.২০১৬ তারিখে আরও একটি ভুয়া কমিটি তৈরি করে
মাদ্রাসার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তার ভুয়া কমিটির সভাপতি হিসেবে
আমাকে দেখাচ্ছেন বলে আমি জানতে পারি। যাদেরকে ওই মাদ্রাসা কমিটির সদস্য
দেখানো হয়েছে তারাও এ বিষয়ে কিছু জানেন না মর্মে লিখিত বক্তব্যও দিয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে মাদ্রাসা সুপার সিরাজুল ইসলাম গোপনে আমাদের নাম পদবি ব্যবহার
করে এবং আমাদের স্বাক্ষর জাল করে দিনের পর দিন দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে মাদ্রাসাটিকে তার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান
হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ভুয়া কমিটি দেখিয়ে সুপার সিরাজুল জাল কাগজপত্র তৈরি
করে গত ২৬.০২.২১ তারিখে মাদ্রাসায় তার পরিবারের তিনজনের নিয়োগ দিয়েছেন।
ঢাকা থেকে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি এনে এবং তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা
অফিসার আতিয়ার রহমানকে ম্যানেজ করে মাদ্রাসা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে
সাতক্ষীরা শহরের অদূরে তালতলা হাইস্কুলে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ড
তৈরী এই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়। সেখানে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবই
তার পরিবারের সদস্য। নিজে সুপার হয়েও সহ-সুপার আজিজুর রহমানকে না জানিয়ে
তাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার দেখিয়ে তার ছেলে সাইফুল ইসলামকে সহকারী
গ্রন্থাগারিক পদে, তার আতœীয় শরিফুল ইসলামকে নিরাপত্তা কর্মী ও তার ছোট
ছেলের স্ত্রী শাহানাজ মুক্তাকে আয়া পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জালিয়াতি
কাগজপত্র দেখিয়ে তাদের নামও এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে। আমি বিষয়টি জানতে
পেরে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের
কাছে লিখিতভাবে এর প্রতিবাদ করেছি। শিক্ষা অফিসার আমাকে জানিয়েছেন যে
মাদ্রাসা নিয়োগ বোর্ড আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি মর্মে
নিয়োগ বোর্ডে হাজির হতে পারিনি মর্মে তাকে জানিয়েছেন। সুপার এই নিয়োগ
দিয়ে তার আত্মীয়ের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করেছেন। এই নিয়োগ কমিটিতে
দুইজন শিক্ষক এসএম ইউনুস ও হাফেজ মোহাম্মদউল্লাহকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দিয়ে
নিয়োগ বোর্ডে নিয়ে আসেন তিনি। পরে তারা আমার কাছে এই জালিয়াতির কথা
বলেছেন। তিনি আরো বলেন, ভুয়া কমিটি ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া
কর্মচারিদের নামে বেতন এলে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আপত্তি দেওয়াতে
নিয়োগপ্রাপ্তরা টাকা তুলতে পারেননি। আমি এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী
অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডেও অভিযোগ দিয়েছি।
এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত। তদন্তকাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে। সংবাদ সম্মেলন
থেকে তিনি এ সময় মাদ্রসা সুপার সিরাজুল ইসলামের অনিয়ম দূর্নীতির তীব্র
প্রতিবাদসহ তার উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবী জানান।
এদিকে, এর আগে একই দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে শিরাশুনি
এলাকাবাসীর ব্যানের একটি মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়। এতে বক্তব্য
রাখেন, মাাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি এম.এম আবুল হোসেন,
মাদ্রাসাটির সহ-সুপার আজিজুর রহমান, ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান, স্থানীয়
এলাকাবাসী সুলতান আলী শেখ প্রমুখ।।##