আশা জাগিয়েও বাংলাদেশের হতাশার হার
স্পোর্টস ডেস্কঃ
বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ভুলে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০তে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের বড় সময় ধরে আধিপত্য বিস্তার করলেও ৪ উইকেটের হতাশার হারে শেষ করেছে টাইগাররা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্য স্পর্শ করে পাকিস্তান। বল বাকী ছিল আরো চারটি।
পাকিস্তানের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের চতুর্থ বলেই রিজওয়ানের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। রিজওয়ান ফেরেন ১১ রানে।
বাবরকে এদিন বড় স্কোর পেতে দেননি তাসকিন। পাক অধিনায়ককে মাত্র ৮ রানে ফেরান তিনি। এরপর হায়দার আলী ও শোয়েব মালিক রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
হায়দারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে দেলেন মাহেদী। আর মালিককে দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তায় রান আউট করেন উইকেটকিপার সোহান। ফলে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে মাত্র ২৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
দ্রুত ৪ উইকেট হারানোর পর দেখে খেলতে থাকেন ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। তবে কিছুটা বেশিই রক্ষণাত্মক হয়ে পড়েন দুজন। ফলে উইকেট না হারালেও রিকোয়ার্ড রান রেট বেশ দ্রুত বাড়তে থাকে।
৩৪ রান করে ফখর আউট হলে ভাঙে দুজনের ৫৬ রানের জুটি। সমান রানে খুশদিল ফিরলে ম্যাচ অনেকটাই বাংলাদেশের দিকে হেলে পড়ে। এ সময় পাকদের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান, বল বাকী ছিল ১৯টি।
বাংলাদেশের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটি ছিনিয়ে নেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। দুজনে মিলে মাত্র ১৫ বলে গড়েন ৩৬ রানের বিধ্বংসী জুটি। শাদাব ২১ ও নওয়াজ ১৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ দুটি এবং মাহেদী হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নাইম শেখ ও সাইফ হাসান। এ ম্যাচ দিয়েই সাইফের টি-২০ ফরম্যাটে অভিষেক হয়।
মোহাম্মদ নওয়াজের করা প্রথম ওভার থেকে আসে ২ রান। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন হাসান আলী। নিজের প্রথম লিগ্যাল ডেলিভারিতেই নাইমকে আউট করেন তিনি। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ হয়ে ফেরার আগে এই ওপেনার করেন ১ রান।
অপর ওপেনার সাইফের অভিষেকটা সুখের হয়নি। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে স্লিপে ক্যাচ দেওয়ার আগে খেলেন ৮ বলে ১ রানের ইনিংস। পরের উইকেট নিয়ে কারো সাহায্য নেননি ওয়াসিম। নাজমুল হোসেন শান্তকে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন তিনি। দীর্ঘদিন পর দলে সুযোগ পাওয়া এই ব্যাটার করেন ৭ রান।
মাত্র ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। এ সময় ২৫ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। নওয়াজের ঘূর্ণিতে বোল্ড হওয়ার আগে ১১ বলে ৬ রান করেন রিয়াদ।
এরপর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন আফিফ। তার ব্যাটেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু শাদাব খানে গুগলিতে বোকা বনে যান তিনি। স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে করেন ৩৪ বলে ৩৬ রান।
আফিফ ফেরার পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন সোহান। তিনি করেন ২২ বলে ২৮ রান। শেষ দিকে টাইগারদের একাই এগিয়ে নেন মাহেদী হাসান। এই অলরাউন্ডার অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে।
শেষ বলে তাসকিন ছক্কা হাঁকালে লড়াই করার মতো সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ৩ উইকেট নেন হাসান আলী। এছাড়া ওয়াসিম দুটি, নওয়াজ ও শাদাব খান একটি করে উইকেট নেন।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে একই ভেন্যুতে আগামীকাল মুখোমুখি হবে দুই দল।