আশাশুনির খেজুরডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুল ভবন ২ বছর পরিত্যাক্ত
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নের ৩৫ নং খেজুরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ২ বছরাধিক পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। বিদ্যালয় ভবনটি সাইক্লোন শেল্টার আকারে নির্মানের ব্যবস্থা করার জন্য এলাকাবাসী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কামনা করেছেন।
১৯৩৭ সালে কাদাকাটি ইউনিয়নের লোকালয় এলাকা থেকে অনেক দূরে ফাকা বিলের মধ্যে দু’টি গ্রামের শিশুদের শিক্ষা দানের জন্য গ্রামের বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গ বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। এ গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম অনেক দূরে, যাতয়াতের পথও খুবই খারাপ। তাই বিদ্যালয়টির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টিকে সরকারিকরণ করা হয়। খেজুরডাঙ্গা ও বিল খেজুরডাঙ্গা গ্রামের পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার দুয়ার উন্মোচিত করার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হলেও সীমিত সংখ্যক পরিবারর সীমিত সংখ্যক ছেলেমেয়েদেরও শিক্ষা গ্রহনের অধিকার আছে, তাই বিদ্যালয়টিকে একতলা বিল্ডিং করে সুন্দর পরিবেশ করা হয়। এলাকার বাচ্চারা আগ্রহ সহকারে লেখাপড়া করে থাকে। কিন্তু বিদ্যালয়টি যখন খুবই খারাপ হয়ে পড়ে তখন সরকারি অনুদান নিয়ে সংস্কার কাজ করে কোন রকমে বিদ্যালয় পরিচালনা করা হচ্ছিল। পরবর্তীতে বিদ্যালয় ব্যবহার সম্পূর্ণ অনুপযোগি হয়ে পড়লে দু’বছর আগে বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। সে সময় সরকারি সহায়তায় কোন রকমে বিদ্যালয় পরিচালনা করে নেওয়ার জন্য ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেড ঘর নির্মান করা হয়। ঘরে পাটিশান দিয়ে দু’শিপটে ৫ শ্রেণির ক্লাশ পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু গরমের দিনে যেমন গরমে বাচ্চাদের কঠিন অসুবিধায় পড়তে হয়, তেমনি ঝড়-বর্ষা মৌসুমে ভিতরে পানি ঢোকা, টিনের চালে বৃষ্টির বিকট শব্দে ক্লাশ পরিচালনা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এজন্য এলাকাবাসীর আকুল আবেদন মাছের ঘের ও খালবিলে ঘেরা গ্রাম দু’টির মানুষের সাইক্লোন ও বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানির চাপে বসবাস অনুপযোগি হয়ে পড়া মৌসুমে মানুষের প্রাণ রক্ষা ও জানমালের নিরাপত্তার জন্য স্কুলটিতে সাইক্লোন শেল্টার কাম প্রাইমারী স্কুল ভবন নির্মান করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে।
অপরদিকে বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বহমান বৃহদাকৃতির খাল গ্রাম দু’টিকে পৃথক করে রেখেছে। খাল পারাপারের জন্য সুব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বাঁশ টানিয়ে একপেয়ে পারাপার ব্যবস্থাই সম্বল হয়ে আছে। ফলে একজন বাঁশের সাঁকো পার হওয়ার সময় অপর পাড়ের অন্যজনকে অপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকতে হয়। মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে পা পিছলে খালের পানিতে পড়ে আহত ও বইপত্র ভিজে নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। টিউবওয়েলটি নষ্ট হয়ে আছে। ল্যাট্রিনটিও ব্যবহার অনুপযোগি বললেও ভুল হবেনা।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি পঞ্চানন কুমার মন্ডল ও প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র দাশ জানান, বিদ্যালয় ভবন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখানে সাইক্লোন শেল্টার কাম বিদ্যালয় নির্মানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের কাছে এলাকাবসীর সাথে আমরাও অনুরোধ জানেয়েছি।
ক্লাস্টার অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার গৌরাঙ্গ গাইন জানান, বিদ্যালয়টি খুবই অবহেলিত এবং প্রত্যান্ত ফাকা বিলের মধ্যে অবস্থিত। নতুন ভবনের প্রয়োজন আছে। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবো।