হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে মারপিট মামলার আসামিরা!
দেবহাটা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার দেবহাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে নওয়াপাড়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা ও শিমুলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হামিদ উদ্দীনের ছেলে রবিউলকে তার বাড়ির পাশে ফেলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখমের পর ওই রাতের আহতের চাচতো ভাই আরিজুল ইসলাম বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত হেকমোতুল্যাহ সরদারের ছেলে বাবর আলী (৬৫), তার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩২) ও পাশ্ববর্তী মৃত বাশার উদ্দীনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫০) সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে দেবহাটা থানায় মামলাটি (নং-৫) দায়ের করেন।
অন্যদিকে রবিউল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখমের পর ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আহত হওয়ার ভান ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন হামলা ও মারপিটের মুল নেতৃত্বে থাকা বাপ-বেটা বাবর আলী ও জাহাঙ্গীর। এমনকি আহত রবিউল ও তার পরিবারের বিপক্ষে থানায় পাল্টা অভিযোগও দায়ের করেন সুচতুর বাবর আলীরা। কিন্তু অভিযোগ পেয়েই থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলে এবং হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খোঁজ খবর নিতে গেলেই বেরিয়ে পড়ে আসামি পক্ষের থলের বিড়াল। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর হাসপাতালে পৌঁছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান রবিউলকে মাথায় একাধিক সেলাই নিয়ে বেডে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। অপরদিকে পাশের দুটি বেডে বসে থাকা বাবর আলী ও জাহাঙ্গীরকে তাদের ব্যান্ডেজ খুলে গল্প গুজব আর হাসি ঠাট্টা করতে দেখে পুলিশ।
ওই রাতেই আহত রবিউলের চাচতো ভাই আরিজুলের দায়েরকৃত এজাহারটি মামলা হিসেবে রূজু করে পুলিশ। একই সাথে নাটকীয়ভাবে হাসপাতালে ভর্তি থাকা মামলার আসামি বাবর আলী ও জাহাঙ্গীরের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখতে এবং তাদেরকে ছাড়পত্র না দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে পুলিশ। ততক্ষনে মামলার খবর পৌঁছে যায় আসামিদের কাছে। গভীর রাতে হাসপাতালের স্টাফ, নার্স, রোগী ও তাদের স্বজনরা ঘুমিয়ে পড়লে সুযোগ বুঝে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় ওই মামলার অন্যতম আসামী বাবর আলী ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর। বর্তমানে তারাসহ ওই মামলার প্রত্যেক আসামীই পলাতক থেকে আহত ও বাদীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
মামলাটির তদন্তকারি কর্মকর্তা দেবহাটা থানার এসআই মোবাস্বের আলী জানান, মামলা রূজু হওয়ার পর খবর পেয়ে আসামিরা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।