ইছামতি নদী সাঁতরে ফেনসিডিল পারাপারকালে গ্রেফতার-৩; ধরাছোঁয়ার বাইরে মুলহোতারা!
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার দেবহাটায় সীমান্তবর্তী ইছামতি নদী সাঁতরে প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে মাদকদ্রব্য পারাপারকালে ২৫ বোতল ফেনসিডিল সহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার সেকেন্দ্রা গ্রামের বাবর আলীর ছেলে বর্তমানে দেবহাটা সদরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম গাজী ওরফে পাখি, দেবহাটা সদরের রমজান সরদারের ছেলে নাজমুল সরদার এবং একই গ্রামের মুসা মোড়লের ছেলে আব্দুল আলেক মোড়ল। শুক্রবার দিবাগত ভোররাতে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ ওবায়দুল্লাহর নেতৃত্বে এসআই হাফিজুর রহমান সহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ইছামতি নদীর কোলঘাষা দেবহাটা বাজারের পাশ্ববর্তী একটি সেলুনের দোকানের সামনে এলাকা থেকে ২৫ বোতল ফেনসিডিল সহ তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোররাতে একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাকারবারী চক্র ইছামতি নদী সাঁতরে ভারত থেকে মাদকদ্রব্য পার করছে বলে গোপন সংবাদে জানতে পারে থানা পুলিশ। এমন খবরের ভিত্তিতে দেবহাটা বাজারসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের একটি অভিযানিক দল অবস্থান নেন। ভোর ৫টার দিকে ইছামতি নদী সাঁতরে মাদকদ্রব্য নিয়ে বাংলাদেশের সীমানায় পৌঁছালে মাদক কারবারি জাহাঙ্গীর আলম পাখি, নাজমুল সরদার ও আলেক মোড়লকে ফেনসিডিল সহ গ্রেফতার করে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, দেবহাটা সদর ইউনিয়নের বসন্তপুর এলাকার ইউপি সদস্য ও মাদক চোরাচালানি আরমান হোসেন এবং তার সহযোগী হাবিব প্রায় প্রতিরাতে ওই সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে লোক পাঠিয়ে প্রতিবেশি দেশ থেকে ইছামতি নদী সাঁতরে শত শত বোতল ফেনসিডিলের চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। মাঝেমধ্যে দু’একটি ছোটখাটো চালান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ধরা পড়লেও বহাল তবিয়তে ভারত থেকে আনা এসব ফেনসিডিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে আসছে ইউপি সদস্য আরমান ও তার সহযোগী হাবিব। তাদের সিন্ডিকেটে রয়েছে বিজিবি’র সোর্সখ্যাত চন্ডিপুরের আবুল কালাম ওরফে এফএস কালামসহ আরোও বেশ কয়েকজন চোরাকারবারি। হয়রানী, মিথ্যা মামলা ও হামলার ভয়ে এসব চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননা সীমান্ত পাড়ের বাসিন্দারা। তারা আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ভারত থেকে নদী সাঁতরে ফেনসিডিল আনায়নে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক মুটে বা শ্রমিক গ্রেফতার হলেও বরাবরই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মাদক চোরাচালানের এসব গডফাদাররা। আরমান মেম্বর, হাবিব, এফএস কালামসহ ওই মাদক চোরাচালানি সিন্ডিকেটের হোতাদের আইনের আওতায় আনা হলে দেবহাটা সদর, বসন্তপুর ও আশপাশের এলাকায় মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা একেবারে শূন্যে নেমে আসবে বলেও জানান সীমান্ত পাড়ের বাসিন্দারা।
এদিকে গ্রেফতারের পর মাদক কারবারী জাহাঙ্গীর আলম পাখি, নাজমুল সরদার ও আলেক মোড়লের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা (নং-০৯) দায়ের শেষে বিচারার্থে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।