তালেবানের হাতে ১৩ হাজারা সংখ্যালঘু নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের অন্তত ১৩ সদস্যকে হত্যা করেছে তালেবান। নিহতদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীও রয়েছে। গত আগস্ট মাসে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার অল্পসময় পরই দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ দেইকুন্ডিতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এনেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

মঙ্গলবার প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এই সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৩০ আগস্ট আফগানিস্তানের খিদর জেলায় প্রবেশ করে ৩০০ তালেবান যোদ্ধা। এসময় তারা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর (এএনএসএফ) অন্তত ১১ জন সদস্যকে হত্যা করে। এদের ৯ জন নিহত হওয়ার আগে তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তবে আত্মসমর্পণের পরও তাদেরকে পার্শ্ববর্তী একটি নদীর তীরে নিয়ে হত্যা করা হয়।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, সেদিনের সেই হত্যাকাণ্ডের সময় আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক কয়েকজন সদস্য প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তালেবান যোদ্ধারা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে মাসুমা নামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী নিহত হন। এছাড়া তালেবানের ক্রসফায়ারে সেদিন ফয়েজ নামে আরও এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন। বয়সে বিশের কোঠায় থাকা ফয়েজ মাত্র কিছুদিন আগে বিয়ে করেছিলেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তালেবানের হাতে নিহত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক ওই সদস্যদের বয়স ২৬ থেকে ৪৬ বছরের মধ্যে। তারা সবাই দেশটির সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম শাসনামলেও হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন হাজারা জনগোষ্ঠীর সবাই।

চলতি বছর হাজারাদের ওপর তালেবানের চালানো হত্যাকাণ্ড এটিই প্রথম নয়। গত ১৯ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার আগে গত জুলাই মাসে দেশটির গজনি প্রদেশে হাজারা সম্প্রদায়ের ৯ ব্যক্তিকে হত্যা করে তালেবান।

তবে হাজারাদের বিরুদ্ধে চালানো সর্বশেষ ওই হত্যাকাণ্ডের কথা গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিনেই অস্বীকার করে তালেবান। দেইকুন্ডি প্রদেশে তালেবানের নিযুক্ত নতুন পুলিশ প্রধান শফিকুল্লাহ আবেদ সেদিন দাবি করেছিলেন যে, বিরোধী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তাদের কেবল এক জন যোদ্ধা আহত হয়েছেন।

আলজাজিরার কাছে তালেবানের ওই হত্যাকাণ্ডের তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেইকুন্ডি প্রদেশের আইনসভার সাবেক সদস্য রাইহানা আজাদ। আগস্টের ৩০ তারিখে সেখানে তালেবান যোদ্ধাদের চালানো ওই হত্যাকাণ্ডকে তিনি ‘অমানবিক’ বলেও আখ্যায়িত করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)