‘মন্ত্রী-এমপির সন্তান পরিচয়ে নয়, সাংগঠনিক মূল্যায়নে মনোনয়ন’
দলের নেতা-মন্ত্রী-এমপির সন্তানরা রাজনীতিতে পরিশ্রম করে আসুক। রাজনীতির মাঠে সময় দিক। তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা কতটুকু, তা দেখে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দলের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় এমন নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এদিন কুমিল্লা-৭ আসনের উপ-নির্বাচন, ৯টি উপজেলা ও একটি পৌরসভায় মনোনীত প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। কুমিল্লা-৭ আসনের উপ-নির্বাচন প্রার্থীদের বিষয়ে আলোচনায় প্রয়াত এমপি অধ্যাপক আলী আশরাফের ছেলে মুনতাকিম আশরাফসহ অনেক প্রার্থীর নাম উঠে আসে।
এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নেতাদের সন্তানরা যারা রাজনীতি করে, দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা কতটুকু, দেখতে হবে। তাদের অন্যান্য কর্মকাণ্ডও দেখতে হবে। তারাও রাজনীতিতে স্ট্রাগল (পরিশ্রম) করে আসুক। রাজনীতির মাঠে সময় দিক। তখন তাদের বিষয়ে বিবেচনা করা যাবে।
স্থানীয় সরকারের প্রার্থীতার বিষয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বলেন, তৃণমূলে যেন অনুপ্রবেশকারী মনোনয়ন না পায়। স্থানীয় সরকারে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থী নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহার প্রণয়নের জন্য বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, সবার পরামর্শ নিয়ে যা যা ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা যায় এখনই প্রস্তাবনা আকারে তুলে আনতে হবে।
এছাড়া সারাদেশের সংগঠনকে শক্তিশালী করে নির্বাচনমুখী করারও নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ কমেছে, আমি চাই সাংগঠনিক কাজটা শুরু করেন। যেখানে কমিটি নাই কমিটি করতে হবে। দ্বন্দ্ব থাকলে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। সবাইকে নিয়ে দল গোছাতে হবে। কমিটি করার ক্ষেত্রে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের দায়িত্ব দিতে হবে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হবে, সেগুলো তথ্য প্রমাণসহ জবাব দিতে হবে। সরকার ও দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার করলে ব্যবস্থাও নিতে হবে, নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর গণভবনে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভায় কুমিল্লা-৭ আসন, ৯টি উপজেলা ও একটি পৌরসভায় উপ-নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়।
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।
এছাড়া যশোর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা পরিষদ নাজমা সরোয়ার, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদে মো. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদে আফতাব উদ্দিন ভূঞা, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা পরিষদে মো. রকিবুল হাসান শিবলী, নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা পরিষদে মো. রাব্বানী জব্বার, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদে ভানু লাল রায়, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদে নাছরিন জাহান চৌধুরী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদে শুসেন চন্দ্র শীল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।
পাশাপাশি রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মো. অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলের উপ-নির্বাচনে মো. জিয়াউল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।