ভারত ফেরত যাত্রীদের থাকতে হবে না প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে
নিউজ ডেস্ক:
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসা ভারত ফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আর থাকতে হচ্ছে না। বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর) থেকে করোনা নেগেটিভ সনদপত্র থাকা যাত্রীদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদপত্র দেখালেই উভয় দেশে অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
নিউজ প্রকাশের সপ্তাহ দেড়কের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়রের আদেশে ভারত ফেরত যাত্রীরা সরাসরি নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইন করতে পারবেন। একইসঙ্গে যশোরে বিভিন্ন হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৩৩২ যাত্রীকে করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতে করোনার ব্যাপক সংক্রমণের কারণে গত ২৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহের জন্য সীমান্ত পারাপার বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। এ সময় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি আটকা পড়েন ভারতে। তাদের ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপহাইকমিশন থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের গত এক সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৯ হাজার ৮৮ জন ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।
এর মধ্যে ৩৩২ জন যাত্রী যশোরে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাদের মধ্যে বেনাপোলের আবাসিক হোটেলে ১৯৫ জন, যশোর শহরের হোটেল ও পিটিআই রেস্ট হাউসে ১০৭ জন এবং ঝিকরগাছা উপজেলার গাজীর দরগাহ মাদরাসায় ৩০ জন আছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চিকিৎসায় ভারতে গিয়ে ফেরা এসব মানুষ হোটেলে থাকতে গিয়ে অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে গণ্যমাধ্যমে অভিযোগ করে আসছিলেন।
ভারতফেরত যাত্রীদের কষ্ট লাগবের জন্য তাদের ওপর আরোপিত বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শর্ত প্রত্যাহার করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি যশোরে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর) অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারত ফেরত যাত্রীদের আরটিপিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদপত্র দেখিয়ে নিজ বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করা হবে।
তবে ১০ বছরের কম বয়সী যাত্রীদের ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ সনদপত্র দেখাতে হবে না। যাত্রীদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকলে তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। যারা ইতোমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন, আরটিপিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে যাত্রীদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকলে তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
জেলা করোনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাতিল এবং হোম কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার থেকে ভারত ফেরত যাত্রীদের আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। ফেরার আগে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতিও লাগবে না। যারা বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তাদের করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।