আজ শিক্ষক দিবস
অনলাইন ডেস্ক:
কথায় বলে, জীবনে প্রথম যিনি পৃথিবীর আলো দেখান তিনি প্রথম গুরু। যে মানুষটি হাত ধরে সমস্ত বাঁধা বিপত্তি টলতে সেখান তিনি দ্বিতীয় জন আর অবশ্যই হাজার চড়াই উতরাই পার করতে জীবনের জ্ঞান সমৃদ্ধ করার চেষ্টায় যিনি আমাদের নানানভাবে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে চলেছেন তিনি শিক্ষাগুরু। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষকের প্রতি এক অগাধ সম্মান, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা নিয়েই পথ চলতে শুরু করে সবাই। কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল তার ব্যাখ্যা দিয়েই সবসময়ই বাঁচিয়ে চলেছেন শিক্ষকেরা।
৫ সেপ্টেম্বর, পুরো দুনিয়াতে এই দিনটি শ্রদ্ধাভরে পালন করেন ছাত্র ছাত্রীরা। এই বিশেষ দিনে প্রতিটি ছাত্র ছাত্রী তাদের গুরুকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে চান। শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে এই দিনটি উৎসব হিসেবে পালন হয়। যদিও ইন্টারন্যাশনাল টিচার্স ডে কিন্তু ৫ অক্টোবর। তবে ভারতে ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালিত হয়।
১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো ঘোষণা করেছিল, ৫ অক্টোবর পালিত হবে ইন্টারন্যাশনাল টিচার্স ডে। আমরা সবাই জানি ৫ সেপ্টেম্বর ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, বিদ্বান, দার্শনিক ও ভারতরত্ন পুরস্কারে ভূষিত ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন এদেশে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্ম হাজার ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। তামিলনাড়ুর তিরুমনিতে। তবে শুধুমাত্র তার জন্মদিন বলেই ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে সারা দেশে পালন করা হয় না। এর পিছনে একটি গল্প রয়েছে। আসলে ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। ৫ সেপ্টেম্বর দিনটিতেই তিনি নিজের কার্যালয়ে পৌঁছেছিলেন প্রথমবার। সেখানে তার কিছু ছাত্র ও বন্ধু আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণণ অফিসে পৌঁছানো মাত্রই তারা সেলিব্রেট করবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। তবে রাধাকৃষ্ণাণ কার্যালয়ে পৌঁছেই জানিয়ে দেন, কোনোরকম সেলিব্রেশন, হইচই তিনি করতে চান না। তবে তিনি তার ছাত্রদের এটাও বলেন, এই দিনটিকে বিশেষ করে রাখতে তারা যেন একটু অন্য উদ্যোগ নেয়। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর দিনটা দেশের শিক্ষকদের উৎসর্গ করা হোক। সেই থেকেই এই দিনটাকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করে সারা দেশের ছাত্র ছাত্রীরা।
মাহামারির কারণে গত বছর টিচার্স ডে সেলিব্রেশন বলে কিছু হয়নি। কারণ গত বছর এই সময়ে স্কুল-কলেজ ও বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটে তালা ঝুলছিল। তবে দেশের বহু ছাত্র-ছাত্রী ভার্চুয়ালি এই দিনটাকে গত বছর পালন করেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রিয় শিক্ষককে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ছিলেন ছাত্র ছাত্রীরা। এই বছরও করোনা সংক্রমণ চলছে। কিছু জায়গায় স্কুল কলেজ খোলা। আবার কিছু জায়গায় বন্ধ। তবে এবারও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষকের প্রতি সম্মান জানাচ্ছে বহু ছাত্র-ছাত্রী।