অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে টি-২০ র্যাংকিংয়ের ছয়ে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্কঃ
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তে ৪ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে টি-২০ র্যাংকিংয়ের ছয় নম্বরে উঠে এসেছে টাইগাররা।
শুক্রবারের জয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের দেওয়া ১৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৭ রান সংগ্রহ করতে পারে ব্ল্যাকক্যাপসরা।
এই জয়ের পরই আইসিসির টি-২০ র্যাংকিং আপডেট করা হয়। যেখানে ষষ্ঠ স্থানে দেখা যায় বাংলাদেশের নাম। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে দশ নম্বর পজিশন থেকে সোজা সাতে উঠে যায় টাইগাররা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন টম ব্লান্ডেল ও রাচীন রবীন্দ্র। তৃতীয় ওভারে সাকিব আসা মাত্রই তাকে ছক্কা হাঁকিয়ে আক্রমণাত্মক শুরুর বার্তা দিয়েছিলেন রবীন্দ্র। কিন্তু পরের বলেই তাকে বোল্ড করেন টাইগার অলরাউন্ডার।
১০ রানে রবীন্দ্র আউট হওয়ার পরের ওভারে আরেক ওপেনার ব্লান্ডেলকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মাহেদী হাসান। এরপর ৪৩ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন উইল ইয়ং ও টম লাথাম।
২২ রান করা ইয়ংকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ৮ রানের বেশি করতে দেননি নাসুম আহমেদ। এরপরই মাহেদী হাসানের বলে আউট হন হেনরি নিকোলস। দুই ব্যাটসম্যানকেই তালুবন্দী করেন মুশফিকুর রহিম।
একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে যাওয়া অধিনায়ক টম লাথাম ৩৮ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন। তবে অন্য প্রান্তে তেমন সহায়তা পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৫ রানে।
অন্যপ্রান্তে ম্যাককনি ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৩৭ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মাহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসান। অপর উইকেটটি নেন নাসুম আহমেদ।
বাংলাদেশের জয়টা অবশ্য সহজে আসেনি। শেষ ২ বলে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। এমতাবস্থায় বিমার করে বসেন মুস্তাফিজ। সেই বলে লাথাম ৪ হাঁকালে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২ বলে ৮ রান।
ফ্রি হিটে ২ রানের বেশি নিতে পারেননি লাথাম। ফলে শেষ বলে প্রয়োজন দাঁড়ায় ৬ রান। এমতাবস্থায় ১ রানের বেশি নিতে পারেননি লাথাম। ফলে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা।
এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নাঈম শেখ ও লিটন দাস।
দ্বিতীয় ওভারেই কোল ম্যাককনির বলে কলিন ডি গ্রান্ডহোমের কাছে জীবন পান লিটন। সুইপ করতে গিয়ে সোজা গ্রান্ডহোমের হাতে বল দিয়েছিলেন তিনি। তবে কিউই অলরাউন্ডার সেটি তালুবন্দী করতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে আজাজ প্যাটেলের পরের ওভারে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান এই ওপেনার।
নাঈম ও লিটনের উদ্বোধনী জুটি বেশ ভালোভাবেই এগোতে থাকে। দুজনের হাত ধরে দীর্ঘদিন পর টি-২০তে অর্ধশতাধিক রানের জুটির দেখা পায় বাংলাদেশ। রাচীন রবীন্দ্রর বলে সিংগেল নিতে গিয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে লিটন দাস বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে দুজনের ৫৯ রানের জুটি।
সাজঘরে ফেরার আগে ২৯ বলে ৩৩ রান করেন লিটন। পরের ডেলিভারিতেই মুশফিকুর রহিমকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন রবীন্দ্র। মিস্টার ডিপেন্ডেবল ফিরে যান কোনো রান না করেই।
সাকিব আল হাসানও ব্যাট হাতে এদিন ব্যাট হাতে বেশি কিছু করতে পারেননি। ম্যাককনির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অভিষিক্ত বেন সিয়ার্সের তালুবন্দী হন তিনি। এর আগে করেন ৭ বলে ১২ রান।
অল্প সময়ের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক রিয়াদ ও নাঈম। দুজনে মিলে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। ফিফটির সুবাস পেলেও ৩৯ রানের বেশি করতে পারেননি নাঈম। রবীন্দ্রকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে টম ব্লান্ডেলের তালুবন্দী হন তিনি।
আফিফ হোসেন এ ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন। তিনি ৩ বলে করেন ৩ রান। শেষ দিকে রিয়াদ ঝড়ে ভালো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। টাইগার অধিনায়ক ৩২ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
শেষ বলে আউট হওয়ার আগে নুরুল হাসান সোহান করেন ১৩ রান। কিউইদের হয়ে রবীন্দ্র ৩টি এবং আজাজ প্যাটেল, ম্যাককনি ও হামিশ বেনেট একটি করে উইকেট শিকার করেন।
সিরিজের তৃতীয় টি-২০তে আগামী রোববার মুখোমুখি হবে দুই দল।