১২৪ যাত্রীকে বাঁচিয়ে মারা গেছেন ক্যাপ্টেন নওশাদ
নিউজ ডেস্ক:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এর পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম মারা গেছেন (ইন্না…রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর।
সোমবার স্থানীয় সময় ১০টা ৪৫ মিনিটে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেন ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
ওমানের রাজধানী মাস্কাট থেকে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার পথে আসছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি। ভারতের রায়পুরের আকাশে থাকাকালে হুট করেই নিথর হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম। তখনই ককপিটের কন্ট্রোল নেন সঙ্গে থাকা ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিম, ঘোষণা করেন মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি।
ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ হওয়ার ২৫ মিনিটের মধ্যে নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করেন উড়োজাহাজটি। রানওয়েতে নামামাত্র দ্রুত ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম ভারতের একটি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) হয়। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি ‘কোমায়’ চলে যান। হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস ডিরেক্টর ডা. সুভরজিৎ দাশগুপ্ত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিশিয়ান ডা. রঞ্জন বারোকার, এবং ডা. বীরেন্দ্র বেলেকারের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম।
বিমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর আগে জানানো হয়, তার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে মেডিক্যাল বোর্ড। প্রায় তিনদিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও ফেরানো যায়নি কৃতি এই পাইলটকে। আজ তিনি পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
এর আগে রোববার দুপুরে নওশাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিমানের বেশ কয়েকটি অসমর্থিত সূত্র তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওশাদের মৃত্যুর ঘোষণা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয়নি।
ক্যাপ্টেন নওশাদ ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ হলেও স্বজনরা লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এরপর সোমবার তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে নওশাদকে মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম ১৯৭৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করেন।