বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার দল ঘোষণা:ডাক পেলেন দিবালা

স্পোর্টস ডেস্ক:

কোপা আমেরিকা জয়ের পর এবার আর্জেন্টিনার লড়াই সে সাফল্য ধরে রাখার। যার শুরুটা হচ্ছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব দিয়ে। সে লক্ষ্যে গত সোমবার রাতে দল ঘোষণা করেছেন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি।

গেল জুলাইয়ে দল উড়তে থাকা ব্রাজিলকে মাটিতে টেনে এনে ঘুচিয়েছে ২৮ বছরের শিরোপাখরা। আর্জেন্টিনা সেই সেলেসাওদের মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও। খেলাটা হবে ব্রাজিলের মাঠে, আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আবারও মহারণ লিওনেল মেসি আর নেইমারদের। এর আগে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে খেলবে একটি ম্যাচ, এরপরই আবার বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবে আলবিসেলেস্তেরা।

মোটাদাগে কোপা আমেরিকার দলটার ওপরই ভরসা রেখেছেন কোচ স্ক্যালোনি। চোটের কারণে লুকাস আলারিও, সার্জিও আগুয়েরো, অগাস্তিন মার্চেসিনরা বাদ না পড়লে হয়তো সেই স্কোয়াডটাকেই হয়তো দেখা যেত বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে।

হুয়ান ফইথ আর পাওলো দিবালা ঢুকেছেন দলে। ফইথকে দলে আনা হয়েছে বাড়তি ডিফেন্ডার হিসেবে। আর পাওলো দিবালার দলে আসায় পারফর্ম্যান্স তো ছিলই, কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল বৈকি। কোপায় দলের ব্যাকআপ ফরোয়ার্ড সার্জিও আগুয়েরো এই দলে নেই চোটের কারণে, এরপর মাউরো ইকার্দিও পড়েছেন একই কাটায়। ফলে পাওলো দিবালার দ্বারস্থ হয়েছেন কোচ স্ক্যালোনি।

তবে তার পারফর্ম্যান্সও কথা বলছে পক্ষেই। জুভেন্তাসের হয়ে চলতি মৌসুমে খেলেছেন প্রথম ম্যাচে, ম্যাচের তিন মিনিট না যেতেই করেছেন প্রথম গোলটাও।

ওদিকে লাওতারো মার্টিনেজ চোট নিয়ে ছিলেন না ইন্টার মিলানের ম্যাচেই। চোট সারিয়ে ফিরলেও প্রথম ম্যাচেই কোচ স্ক্যালোনি তাকে মাঠে নামানোর ঝুঁকিটা নেবেন, এমন কিছু বলে দেওয়া যাচ্ছে না এখনই। ফলে ম্যাচেও পাওলো দিবালাকেই সেন্টার ফরোয়ার্ড রোলে দেখার সম্ভাবনা আছে বেশ।

আক্রমণভাগে যে তার সঙ্গী হবেন লিওনেল মেসি, তা বলাই বাহুল্য। তবে পরের জায়গাটা নিয়ে আছে কিছুটা ধোঁয়াশা। আনহেল ডি মারিয়াকে ফাইনাল ছাড়া পুরো কোপা আমেরিকাতেই কোচ স্ক্যালোনি ব্যবহার করেছিলেন সুপার সাব হিসেবে। ফাইনালে কৌশলগত চমক দিতেই ছিল তার একাদশে আগমন। তবে সেটা বিশ্বকাপ বাছাইয়েও দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বেশ। পিএসজির হয়ে প্রথম ম্যাচেই পেয়েছেন গোল, তাকে কী করে একাদশে না রাখবেন কোচ স্ক্যালোনি?

রাখতে পারেন, যদি দলের রক্ষণাত্মক স্থিতির কথা মাথায় রাখেন কোচ, তাহলে। শেষ দেড় দুই দশকে রক্ষণে ফরোয়ার্ডদের অবদানও দেখা হয় বেশ বড় করে, সেক্ষেত্রে পাপু গোমেজ, কিংবা নিকলাস গঞ্জালেসকেও দেখা যেতে পারে একাদশে।

মাঝমাঠে সৃষ্টিশীলতার অভাব আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় সমস্যা। একাদশে থাকা সম্ভাব্য মিডফিল্ডার রদ্রিগো ডি পল, লিয়ান্দ্রো পারেদেসদের কেউই যে খুব বেশি সৃষ্টিশীল নন। সেজন্যেই জিওভানি লো চেলসো কিংবা ডি মারিয়াকেই দেখা যেতে পারে দুজনের সঙ্গী হিসেবে।

বড় কোনো দুর্বিপাক না ঘটলে রক্ষণ আর গোলমুখে আবারও দেখা যেতে পারে কোপা আমেরিকার নায়কদেরই। যারা নিজ নিজ ক্লাবেও বেশ পারফর্ম করেছেন সদ্য শুরু হওয়া ইউরোপীয় লিগগুলোয়।

সব মিলিয়ে কোপা আমেরিকার সাফল্য ধরে রাখার জন্য কাগজে কলমে বেশ শক্তিশালী এক দলই ঘোষণা করেছে আর্জেন্টিনা। তবে সেটা কাগজ-কলম থেকে মাঠে বাস্তবায়িত হতে পারে কতদূর, তা সময়ই বলে দেবে।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের তিন ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা :

গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), ফ্রাঙ্কো আরমানি (রিভারপ্লেট), হুয়ান মুসো (আটালান্টা), জেরোনিমো রুলি (ভিয়ারিয়াল)
ডিফেন্ডার:
গনজালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), নাহুয়েল মলিনা (উদিনেসে), হেরমান পেজ্জেলা (রিয়াল বেটিস), হুয়ান ফইথ (ভিয়ারিয়াল), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), নিকলাস অটামেন্ডি (বেনফিকা), লুকাস মার্টিনেজ (ফিওরেন্তিনা), মার্কোস আকুনইয়া (সেভিয়া), নিকলাস টালিয়াফিকো (আয়াক্স)।
মিডফিল্ডার:
রদ্রিগো ডি পল (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), লিয়ান্দ্রো পারেদেস (পিএসজি), গিদো রদ্রিগেজ (রিয়াল বেটিস), নিকলাস ডমিঙ্গেজ (বোলোনিয়া), জিওভানি লো চেলসো (টটেনহ্যাম হটস্পার), আলেহান্দ্রো পাপু গোমেজ (সেভিয়া)।
ফরোয়ার্ড:
আনহেল ডি মারিয়া (পিএসজি), আনহেল কোরেয়া (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), হুলিয়ান আলভারেজ (রিভার প্লেট), হোয়াকিন কোরেয়া (ল্যাজিও), নিকলাস গঞ্জালেস (ফিওরেন্তিনা), এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া (অ্যাস্টন ভিলা), লাওতারো মার্টিনেজ (ইন্টার মিলান), লিওনেল মেসি (পিএসজি), পাওলো দিবালা (জুভেন্তাস)।

সম্ভাব্য একাদশ:
এমি;
মন্তিয়েল, রোমেরো, অটামেন্ডি, আকুনইয়া;
ডি পল, পারেদেস, লো চেলসো;
মেসি, দিবালা/লাওতারো, ডি মারিয়া/পাপু গোমেজ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)