উড়ন্ত বিমানের চাকা ধরে বেঁচে ছিলেন এক ভারতীয় যুবক

 অনলাইন ডেস্ক :

তালেবান বাহিনী আফগানিস্তান দখলের পর দেশটি থেকে অনেক মানুষ মার্কিন বিমানে করে পালানো শুরু করেন। কিন্তু বিমানের ভেতরে জায়গা না থাকায় চাকা ধরেই অনেকে যাত্রা করেন।

শুধু কাবুল নয়, এর আগেও বিশ্বে ১১৩টি ‘স্টো অ্যাওয়ে’র ঘটনা ঘটেছে। তবে তার মধ্যে অধিকাংশই ব্যর্থ। এই ধরনের ভ্রমণ করতে গিয়ে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৮৬ জন।

তবে এমন বিমানের চাকায় ভ্রমণকালে খুব অল্প সংখ্যায় হলেও বেঁচে গেছেন হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক। তার নাম প্রদীপ সাইনি।

১৯৯৬ সালের অক্টোবরে প্রদীপ ও তার ছোট ভাই বিজয় গোপনে উঠে বসেন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বোয়িং ৭৪৭ বিমানের চাকার ফাঁকে। নয়াদিল্লি থেকে বিমানটি লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে যাচ্ছিল।

হিথরোয় নামার আগেই ঠান্ডা জমে যাওয়া বিজয়ের দেহ বিমান থেকে মাটিতে পড়ে যায়। পাশেই ছিলেন প্রদীপ। তিনি বেঁচে যান। হিথরোর রানওয়েতে পড়ে থাকা অবস্থায় প্রদীপকে উদ্ধার করেছিলেন বিমানবন্দরের কর্মীরা।

পাঞ্জাবের গাড়ি মেকানিক প্রদীপের বয়স তখন ২২। তার ভাই বিজয় ১৮ বছরের তরুণ। দু’জনকেই শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। প্রাণের ভয়েই লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই ভাই।

৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় মাইনাস ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় চার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করেছিলেন দুই ভাই। এর উপর ওই উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাবও ছিল। পরে এক সাক্ষাৎকারে ভ্রমণের বর্ণনা দিয়ে প্রদীপ বলেছিলেন, ১০ ঘণ্টার সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা এখনও তাড়া করে আমাকে।

তবে ওই ভ্রমণ প্রদীপকে সবদিক থেকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল। ছোট ভাইকে সামনে থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছিলেন তিনি।

শারীরিকভাবেও বিধ্বস্ত হয়েছিলেন প্রদীপ। দীর্ঘদিন কানে শোনার সমস্যায় ভুগেছেন। গাঁটের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যেতেন মাঝে মধ্যেই।

সূত্র: আনন্দবাজার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)