কাবুলজুড়ে উড়ছে তালেবানের পতাকা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলজুড়ে উড়ছে ক্ষমতা গ্রহণের দ্বারপ্রান্তে থাকা তালেবানের পতাকা। প্রায় সব সরকারি ভবনের মাথায় নিজেদের নিশান উড়িয়ে দিয়েছে তারা।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই অবশ্য কাবুলজুড়ে ক্ষমতা বদলের ছবি স্পষ্ট। রাজপথের দখল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে তালেবান সদস্যরা। রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে যানজট তৈরি হয়েছে।

এদিন কাবুলের নিকটবর্তী বহুল আলোচিত বাগরাম বিমানঘাঁটি আর কারাগারেরও নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। প্রায় ২০ বছর ধরে তালেবান ও আল কায়েদার বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযানের মূল কেন্দ্র ছিল বাগরামের এই বিমান ঘাঁটি। গত মাসে আকস্মিকভাবে রাতের আঁধারে মার্কিন বাহিনী এটি ছেড়ে যায়।

নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ওই বিমান ঘাঁটিতে অবস্থিত বাগরাম কারাগারের দরজা খুলে দেয় তালেবান। দীর্ঘদিন এই কারাগারের নিয়ন্ত্রণ ছিল আমেরিকান বাহিনীর হাতে। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে গত ১ জুলাই আফগান বাহিনীকে সেই জেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অবশেষে রবিবার কারাগারটির নিয়ন্ত্রণ হারায় সরকারি বাহিনী।

নিজেদের পতাকা উড্ডয়ন করলেও আফগান জনগণের ওপর কোনও প্রতিশোধ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। পাশাপাশি নারী অধিকার ও শিক্ষার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর অঙ্গীকার করেছে দলটি।

দলের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন বলেছেন, তালেবান নারীদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে। হিজাব পরিধান করে শিক্ষা ও কাজের সুযোগ থাকবে তাদের।

তিনি বলেন, তার দলের নীতি হচ্ছে কারও দেশ ছাড়া উচিত নয়। কারণ আফগানিস্তানের সব মেধা ও দক্ষতা দেশের জন্যই প্রয়োজন। তালেবান চায় সবাই দেশেই থাকবে এবং দেশ গঠনে অংশ নেবে।

সব সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তালেবান।

দলটির এক বিবৃতিতে উচ্চ শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেশে চলমান যুদ্ধ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, কোনও নেতিবাচক পরিবর্তন হবে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন কোনও অবহেলা ছাড়াই দায়িত্ব পালন করেন।

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৮টি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এর পর কার্যত ঝড়ের গতিতে এগোতে শুরু করে দলটি। একে একে হেরাত, আয়বাক, গজনি, কান্দাহার, তালিকান, কুন্দুজের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে সমর্থ হয় তারা। উত্তর দিক থেকে কাবুলের প্রবেশ পথ মাজার-ই-শরিফও একদিনেই দখল করে নেয় তারা।

রোববার সকাল পর্যন্ত মোট ২৬টি প্রদেশ তালিবানের দখলে ছিল। ১৫ আগস্ট রবিবার কাবুলে ঢুকে পড়ার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পথে হাঁটছে দলটি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)