শ্যামনগরে মন্দিরের সম্পত্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দীর্ঘদিনের মন্দিরের সম্পত্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন উত্তরহাজীপুর বাধা গোবিন্দ মন্দিও সমিতির লোকজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরহাজীপুর গ্রামের মৃত. কানাই লাল অধিকারীর ছেলে বিশ^নাথ অধিকারী এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্যামনগর উপজেলার হাজীপুর মৌজায় জে এল নং-৫১, এস এ খতিয়ান নং- ২৪৮, বি আর এস খতিয়ান নং- ৪২৯, এস এ দাগ নং- ১৭৪, হাল দাগ নং- ১৯৯, জমির পরিমান ৪১ শতক। উক্ত সম্পত্তিতে শ্রী শ্রী বাধা গোবিন্দ মন্দির নির্মাণ পূর্বক প্রায় ১০০ বছর ধরে এলাকার সনাতন ধর্মীয় লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে ভক্তবৃন্দ পূজা অর্চনা করে আসছিল। উক্ত সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক শ্রীমন্ত অধিকারীর ছেলে ধীরেন্দ্র অধিকারী ১ (ষোল) আনাংশে ১৭৪ দাগে বাস্তু .৩৭ শতক জমি এসএ জরিপে তার নামে সঠিকভাবে ফাইনালী রেকর্ড হয়েছে। বর্তমানে ওই মৌজায় বি আর এস ৪২৯ খতিয়ানে হাল ১৯৯ দাগে বাস্তু .৩৭ শতকসহ অন্য খতিয়ানের জমি দিয়ে .৪১ শতক জমি ফাইনালি পাবলিস্ড হয়ে উক্ত রেকর্ড গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর তৎরেকর্ডীয় মালিক রবীন্দ্র নাথ হিস্যানুযায়ী ০.৪৭২ আনাংশ, গোপীনাথ ০.৪৭২ আনাংশ, কানাই লাল অধিকারী ০.০২৮ আনাংশ, গোপাল চন্দ্র অধিকারী ০.০২৮ আনাংশ অত্র রেকর্ড গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর এস এ রেকর্ডীয় মালিক ধীরেন্দ্র অধিকারীর নিকট থেকে ইং ১৮/০৭/১৯৮৫ তারিখ, দলিল নং- ৭৭৯৯/৮৫, জমি-.২৪ শতক তার মৃত্যুর পর তার নাম জাল স্বাক্ষর ও জাল দাতা সাজিয়ে শ্যামনগর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস হতে জাল দলিল সৃষ্টি করেছে। অথচ এস এ রেকর্ডীয় মালিক বিগত ১৯৮৩ সালের পূর্বেই মৃত্যু বরণ করেছে। তার সম্পত্তি তুল্যাংশের মালিক তার বেমাতা ভাই .৩৭ শতক সম্পত্তির মালিক হন। উক্ত মালিক থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ওয়ারেশ মালিক বর্তমান জরিপে ৪২৯ নং খতিয়ানে সঠিকভাবে রেকর্ড হয়েছে। উক্ত রেকর্ডীয় জমিতে উত্তর হাজীপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির যা বিগত ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে মন্দিরটি বলবৎ আছে।
শ্যামনগর উপজেলার ৪নং নুরনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়র্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল করিম গত ০২/০২/২০১০ সালে মৃত শ্রীমন্ত অধিকারীর গর্ভজাত পুত্রের বিষয়ে প্রত্যয়ন প্রদান করেন। এ পত্রে প্রথম স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র সহদেব অধিকারী ও লক্ষণ অধিকারী এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র সুবোধ অধিকারী ও ধীরেন্দ্র অধিকার মর্মে উল্লেখ করেন। বিশ^নাথ অধিকারী আরো বলেন, অবৈধভাবে লাভের বশবর্তী হয়ে মন্দির সম্পত্তি দখল পূর্বক এবং মন্দিরের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রবীন্দ্র নাথ অধিকারী একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে প্রভাব খাটিয়ে মার্কেট নির্মাণ শুরু করেছে। উক্ত মার্কেটের দোকানে পজেশন বিক্রয় ও ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের পায়তারা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে মার্কেটের ভিত নির্মাণ শুরু করলে আমরা বাধা দিতে গেলে খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে রবীন্দ্রনাথ অধিকারীকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান বিশে^ চলমান বৈশি^ক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট রোগমুক্তি প্রার্থনালয় রবীন্দ্র নাথ অধিকারীর মত পর সম্পদ লোভী ব্যক্তির এহেন কার্যকলাপে মানুষ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি এলাকার দাবী দীর্ঘদিনের পূজা অর্চনার স্থান শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরটি যাতে ওই পর সম্পদ লোভী রবীন্দ্র নাথ ও তার সহযোগীরা দখল করে মার্কেট নির্মান করে মন্দিরের সম্মান নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।