চিকিৎসক ঈশিতার পদে পদে জালিয়াতি, অবশেষে ধরা

অনলাইন ডেস্ক :

আন্তর্জাতিক এবং দেশি বিভিন্ন সংস্থার ভুয়া প্রতিনিধি পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে কথিত চিকিৎসাবিজ্ঞানী, আলোচক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, চিকিৎসক ইশরাত রফিক ঈশিতাকে (আইপিসি) সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়র ( র‌্যাব)। রোববার রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার তাকে করা হয় তাকে। কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি বা চক্র ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতিমান করার চেষ্টায় নানাবিধি অবৈধ অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। অপরাধীরা নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমের অপব্যবহার করছে। র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে এসব বিষয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৪ এর অভিযানে সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুর-১ থেকে কথিত তরুণ চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও গবেষক, বিশিষ্ট আলোচক, ডিপ্লোম্যাট, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, চিকিৎসক ইশরাত রফিক ঈশিতা ও তার সহযোগী শহীদুল ইসলাম ওরফে দিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঈশিতার বাবার নাম খন্দকার রফিকুল ইসলাম। তার বাসা রাজধানীর কাফরুলে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ভুয়া আইডি কার্ড, ভুয়া ভিজিটিং কার্ড, ভুয়া সিল, ভুয়া সার্টিফিকেট, প্রত্যয়নপত্র, পাসপোর্ট, ল্যাপটপ, তিনশ’ পিস ইয়াবা, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।

ঈশিতা পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে একজন আলোচক, চিকিৎসাবিজ্ঞানী, গবেষক, পিএইচডি সম্পন্ন, মানবাধিকার কর্মী, সংগঠক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদ মর্যাদার এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন বলে ভূয়া পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্ণিত ভুয়া পরিচয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে তিনি ভুয়া নথিপত্র তৈরি ও প্রচার প্রচারণা চালান।

তিনি ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে ২০১৩ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালের জুনে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। একই বছরে তিনি একটি সরকারি সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পান। সেখানে চার মাস চাকরি করার পর শৃঙ্খলাজনিত কারণে চাকরিচ্যুত হন। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। তার ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডিগ্রিগুলো যথাক্রমে, এমপিএইচ, এমডি, ডিও ইত্যাদি। এছাড়া ভুয়া ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হিসেবেও বিভিন্ন মতবাদ প্রচার করে থাকেন।

তিনি প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া নথি উপস্থাপন করে ২০১৮ সালে জার্মানিতে ‘লিন্ডা ও নোবেল লরিয়েট মিট-মেডিসিনে’ অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি প্রচারণা করেন, তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি অ্যাওয়ার্ড বিষয়ক অনুষ্ঠানে উপস্থিতির এডিটিং করা ভুয়া ছবি ও সনদ তৈরি করে গণমাধ্যমে পাঠাতেন এবং নিজেই ভার্চুয়াল জগতে প্রচারণা চালাতেন। করোনা মহামারিকে পুঁজি করে ভার্চুয়াল জগতে প্রতারণায় সক্রিয় ছিলেন তিনি।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)