মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে পিতার সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধি :
কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কালিগঞ্জ উপজেলার গড়ুইমহল গ্রামের মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে শেখ আফজাল হোসেন এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত প্রায় ৯ মাস আগে কালিগঞ্জ উপজেলার প্রবাজপুর গ্রামের মৃত এবাদুল মোল্যার ছেলে আমিনুর মোল্যার সাথে আমার মেয়ে আজমিরা বেগমের বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকে মাদকাসক্ত জামাই আমিনুর, তার মা, বোন এবং ভগ্নীপতি যৌতুকের দাবিতে প্রায় আমার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চলাতো।
যৌতুকের দাবিতে গত ১৮ মে ভোর রাত দেড়টার দিকে আমিনুর মোল্যা আমার মেয়েকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় আমিনুরের মা ও বোন বলে যৌতুকের টাকা না নিয়ে বাড়ি ফিরলে তোকে খুন করে ফেলবো। ওই গভীর রাতে আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে আমার বাড়িতে আসে। তখন আমি মেয়ে আজমিরা বেগমের শরীরে ভয়ানক আঘাতের চিহৃ দেখতে পাই। মেয়ের সংসারে সুখের কথা ভেবে ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তা করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে পরদিন সকালে মেয়েকে পুনরায় আমিনুর মোল্যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। এসময় যৌতুক দিতে না পারায় তাদের কাছে আকুতি জানাই।
কিন্তু যৌতুক লোভী আমিনুর কৌশলে আমার মেয়ের গর্ভের ভ্রণ নষ্ট করে ফেলে। এ-ঘটনার পর গত ১৬ জুন সন্ধ্যায় বৃষ্টি চলাকালীন সময় আমিনুর, তার দুই বন্ধু, মা ও বোন এবং ভগ্নীপতি মিলে লোহার হাতুড়ি ও প্লাস দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে আমার মেয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শেখ আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডকে আড়াল করতে মেয়ের পরনের কাপড় পাল্টে নতুন কাপড় পরিয়ে ও চুল পরিপাটি করে গলায় ওড়নার পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার দেয়। খবর পেয়ে মেয়ের শশুর বাড়িতে গিয়ে মেয়কে আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো কিন্তু মাটিতে দাঁড়ানো অবস্থা দেখতে পাই।
পরে পুলিশ এসে মেয়ের লাশ উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ কর্মকর্তা সহ আমরা সকলে মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহৃ দেখতে পাই। পাশেই হত্যায় ব্যবহৃত লোহার হাতুড়ি ও প্লাস দেখতে পায়। এসময় আমার মেয়ের আঘাতপ্রাপ্ত ফাটা ঠোট ও চোয়াল থেকে রক্ত টোপীয়ে পড়ে পায়ের সামনের জায়গায় স্তূপ জমে যায়। মেয়ে মুখের হাড় ভাঙ্গায় মুখ বাঁকা ছিল। ঘটনাটি যে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড তা পুলিশের উপস্থিতিতে সবাই স্পষ্ট বুঝতে পারেন। তিনি আরো বলেন, এ-ঘটনায় পত্রপত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশিত হয় সেখানে এসআই সিহাবুল ইসলাম লাশের শরীরে আঘাতের চিহৃ আছে বলে স্বীকার করেন।
এরপরও এ-ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা না হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়। তিনি বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কবর থেকে মেয়ের লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন পূর্বক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃ পক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।