সুইডেন জাতীয় দলে বাংলাদেশি ক্রিকেটার
স্পোর্টস ডেস্ক:
ক্রিকেটকে সারাবিশ্বে আরো জনপ্রিয় করে তুলতে একশরও বেশি দেশকে টি-২০ স্ট্যাটাস দিয়েছে আইসিসি। এরপর থেকেই নিয়মিত আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেট আয়োজন করছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। তারই অংশ হিসেবে আগামী দুই মাসে ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে সফর করবে সুইডেন।
আগামী সেপ্টেম্বরে ইউরোপের ১০ দেশ নিয়ে স্পেনে বসবে ইউরোপিয়ান টি-২০ চ্যাম্পিয়নস লিগ। এই প্রতিযোগিতাগুলোকে সামনে রেখে সুইডেন জাতীয় দল ঘোষণা করা হয়েছে। যেই দলে আছেন একজন বাংলাদেশিও।
সুইডেন দলে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসী হুমায়ূন কবীর জ্যোতি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেনে যান তিনি। বর্তমানে পালন করছেন সেখানকার রাজধানী স্টকহোমে একটি রেস্টুরেন্টে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের দায়িত্ব।
সুইডেনের সর্বোচ্চ ক্রিকেট লিগ ‘এলিট ক্রিকেট লিগে’ স্টকহোম টাইগার্সের হয়ে খেলেন জ্যোতি। সেখানে পারফর্ম করেই জাতীয় দলের নজরে আসেন তিনি। তার আদর্শ বাংলাদেশের জাতীয় দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান।
জ্যোতির জন্মস্থান খুলনার দৌলতপুরে। খুলনা ক্রিকেট একাডেমিতে তার ক্রিকেটে হাতেখড়ি। এখান থেকে খেলে খুলনা জেলা অনূর্ধ্ব-১৪, খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলে খেলেছেন তিনি। এমনকি ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ খুলনা বিভাগীয় দলেও ছিলেন।
পরের বছর খুলনার নর্দার্ন ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ সম্পন্ন করার পর সুইডেনে চলে যান। এই ভার্সিটিতেই ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই ছিলেন সোহান। দুজনের বাসাও একই এলাকায় হওয়ায় সম্পর্কও গভীর হয়। সোহানের দেওয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট (গ্ল্যাভস, প্যাড, জার্সি) দিয়েই সুইডেনে তার ক্রিকেট শুরু।
সুইডেনে নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ হয়। দেশটিতে জাতীয় পর্যায়ের দুটি ইভেন্ট হয়। একটি ৫০ ওভারের ম্যাচ, অন্যটি ২০ ওভারের ম্যাচ। এছাড়া লিগ হয় তিনটি স্তরে। ২০১৭ সালে ডেনমার্কে যাওয়ার পর পরিচিত এক ভাইয়ের মাধ্যমে স্টকহোম টাইগার্সে খেলা শুরু করেন জ্যোতি।
দলটি দুই বছর পর সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এলিট লিগে জায়গা করে নেয়। বর্তমানে এলিট লিগের টি-২০ টুর্নামেন্ট চলছে। তার দলও আছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেসে। পয়েন্ট তালিকায় এখন আছে তৃতীয় স্থানে। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকেই সুইডেনে ক্রিকেট খেলতে আগ্রহী হন জ্যোতি।
নিজের ক্রিকেট খেলা নিয়ে জ্যোতি বলেন, উইকএন্ডে রেস্টুরেন্টে প্রচুর চাপ থাকে। সারা রাত ডিউটি করে পরদিন ভোরে আবার খেলতে যাই। সারাদিন খেলে রাতে আবার ডিউটি করি। ওই দুইটা দিন কোনো ঘুম হয় না।
তিনি আরো বলেন, ক্রিকেটকে ভালোবাসি বলেই এভাবে সবকিছু ম্যানেজ করতে পারি। টাকা পয়সার জন্য না। তেমন টাকা পয়সা পাওয়াও যায় না। তবে এখন দেশটি আস্তে আস্তে পেশাদারিত্বের দিকে যাচ্ছে। হয়তো সামনে ক্রিকেট খেলে টাকা পাওয়া যেতেও পারে।
সুইডেন ক্রিকেটের উন্নয়নেও কাজ করছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে দলটির কোচের দায়িত্বে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা অলরাউন্ডার জন্টি রোডস।