সাতক্ষীরার কলারোয়ায় কৃষক সিরাজুল হত্যার তিন আসামী জেল হাজতে

রঘুনাথ খাঁঃ

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার
উফাপুর গ্রামে মুরগী বিক্রির ২০ হাজার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে পুত্রকে পিটিয়ে জখম ও পিতাকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণকারি তিন আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।

রোববার সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক রেজোয়ানুজ্জামান আবেদন শুনানী শেষে তাদের জামিন না’মঞ্জুর করেন।
জামিন না’মঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন সাতক্ষীরার
কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে হৃদয় মোড়ল, একই গ্রামের আব্দুল কাদের ঢালীর ছেলে ওয়াজেদ ঢালী এবং ওমর আলীর ছেলে রুহুল আমিন।

মামলার বিবরণে জানা যায়,গত পহেলা জুলাই রিপন হোসেন একই গ্রামের আব্দুল মাজেদ ঢালীর ছেলে উজ্জ্বল ঢালীর কাছে ২০ হাজার টাকা মূল্যের ব্রয়লার মুরগী বিক্রি করেন। উজ্জ্বল একদিন পর টাকা দেবে বলে তার কাছ থেকে রিপনের কাছ থেকে মুরগী নেয়। ৬ জুলাই টাকা না দেওয়ায়
পরদিন রাত সাড়ে সাতটার দিকে তিনি বসন্তপুর তালতলা মোড়ে নিজ দোকানের সামনে উজ্জলকে পেয়ে টাকা চান রিপন। কিছুক্ষন পর উজ্জ্বল তার ভাই আফজাল, আজগার আলী ছাড়াও ইমান আলী বিশ্বাস ও হৃদয় মোড়ল তার দোকানের
ভিতরে তাকে টাকা দেবে না বলে রিপনকে হেঁকে দেয়।

এ নিয়ে প্রতিবাদ করার একপর্যায়ে উজ্জ্বল ওতার দু’ ভাইসহ ইমান আলী রিপনকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে।

কিছুক্ষণ পর তার বাবা শেখ রেজাউল ইসলাম দোকানে এসে ঘটনা জেনে প্রতিবাদ করায় তাকেও কিল, ঘুষি, লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেওয়া হয়। উজ্জ্বল লোহার রড দিয়ে রেজাউলকে
পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনা চলাকালিন সময় উজ্জ্বলের মোবাইল ফোন পেয়ে অজেদ ঢালী, রণি ঢালী, রুহুল আমিন মোড়ল ঘটনাস্থলে এসে রিপন ও তার বাবাকে যথেচ্ছভাবে বুকে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করে। গলা চেপে রেজাউলকে শ্বাসরোধ করে হতার
চেষ্টা করে হামলাকারিরা। পরে রেজাউল মারা গেছে এমনটি জানার পরও হৃদয়. ইমান, রুহুল আমিন ও হায়দার তার নিথর দেহের উপর লাথি মারে। এ সময় স্থানীয় চায়ের দোকানদার নায়েব আলী ও বেল-াল হোসেন তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে এলে
তাদেরকেও ধাওয়া করে বিতাড়িত করে হামলাকারিরা।

রেজাউলকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে-ক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে। এ ঘটনায় রিপন বাদি হয়ে ৮ জুলাই বাদি হয়ে ২০১৩ সালে উফাপুর গ্রামের মুনসুর আলীর বাড়িতে অহ্নিসংযোগ ও নাশকতা মামলার আসামী উজ্জ্বল, হায়দার ছাড়াও হৃদয়, রুহুল আমিন ও ওয়াজেদ ঢালীসহ নয়জনকে আসামী থানায় হত্যা মামলা (১০নং) দায়ের করেন।

রোববার হৃদয়, ওয়াজেদ ও রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় তিনজনের জামিন না’মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)