দেবহাটায় সরকারি জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে হাসি ফুটেছে ভুমিহীন ও গৃহহীনদের মুখে
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার দেবহাটায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সরকারী জমিসহ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে নির্মিত সরকারি বাসগৃহ পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় ভুমিহীন ও গৃহহীনদের মুখে।
এতে করে একদিকে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের সুষ্ঠ বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং অন্যদিকে বন্দোবস্তকৃত খাঁস জমির কবুলিয়তসহ সরকারী খরচে নির্মিত সেমিপাকা বাসগৃহ পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি হয়েছেন সুবিধাভোগী পরিবারগুলো।
স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে দেশের প্রায় প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খরচে মাথা গোজার মতো নুন্যতম একটি করে আশ্রয়স্থল গড়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সামনে একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে সেই প্রতিশ্রুতির সুষ্ঠ বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি একযোগে দেশের আরো সাড়ে ৫৩ হাজার পরিবারকে সরকারি জমিসহ নির্মিত বাসগৃহ উপহার দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
প্রকল্পটির আওতায় দেবহাটাতে এপর্যন্ত দু’বারে ১০৪টি বাসগৃহ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। যারমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দের বিপরীতে নির্মিত ২৯টি বাসগৃহ নির্মান শেষে সুবিধা ভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া ৭৫টি বাসগৃহের মধ্যে ১০টি বাসগৃহ নির্মান শেষে গত ২০ জুন সুবিধাভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাসগৃহের সাথে ১৮ সুবিধাভোগী পরিবারকে দুই শতক করে সরকারি জমি বন্দোবস্ত দিয়ে কবুলিয়াত দলিলও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে আরোও ১০টি বাসগৃহের নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং দুটি বাসগৃহ নির্মানাধীন রয়েছে। এছাড়া ২২টি বাসগৃহ নির্মানের জন্য মাটি ভরাটের কাজ অব্যহত রয়েছে এবং অদ্যবধি মাটি ভরাটের বরাদ্দ না পাওয়ায় বাকি ৩৩টি বাসগৃহ নির্মানের কাজ অপেক্ষমান রয়েছে।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তারের তত্বাবধানে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব সরকারি বাসগৃহের নির্মানকাজ সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এছাড়া করোনাকালীন সংকটময় পরিস্থিতি এবং বর্ষা মৌসুমের কারনে যেসকল বাসগৃহের নির্মানকাজ বিলম্বিত হচ্ছে সেগুলোও যথাসময়ে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধ পরিকর।
ইউএনও তাছলিমা আক্তার বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা সমগ্র বাংলাদেশের সম্মান জড়িয়ে আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক এ প্রকল্পের কাজ তদারকি করা হচ্ছে। অসহায় মানুষদের বাসগৃহ নির্মানে যাতে কোন দূর্নীতি-অনিয়ম না হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ ও স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে কড়া নজরদারি অব্যহত রয়েছে। নির্মানকাজে অনিয়ম সংক্রান্ত কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পটি দেখভালের দায়িত্বরত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার শফিউল বশার বলেন, সুষ্ঠ ও মানসম্মত ভাবে বরাদ্দকৃত বাসগৃহ গুলোর নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে আমরা আপ্রান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে করোনা পরিস্থিতি, বর্ষা মৌসুম, নিচু জমিতে মাটি ভরাট, লকডাউনে শ্রমিক সংকট ও নির্মান সামগ্রী আনা নেওয়া করতে সমস্যার কারনে কিছু বাসগৃহের নির্মান কাজ একটু বিলম্বিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে জমিসহ সরকারী বাসগৃহ পাওয়া সুবিধা ভোগীদের মধ্যে উপজেলার টিকেট গ্রামের দিলীপ বিশ্বাস, তপন মিস্ত্রি, মঙ্গল টাপালী, রিজিয়া বেগম, আজগর গাজী, আকবর হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক মালি, আজিবর গাজী, সাদ্দাম গাজী, বহেরার নজমা খাতুন, রঘুনাথপুরের গৌর চন্দ্র মল্লিক, কার্তিক চন্দ্র মল্লিক, দুলাল মন্ডল, গোবিন্দ সরকার, বিজয় শংকর, পুটিমারীর সমির মন্ডল, টিকেটের গোপাল মন্ডল, জ্যোতিষ চন্দ্র মন্ডল, পুরাঞ্জন মন্ডল, নিকুঞ্জ মন্ডল বলেন, ‘জন্মের পর বাবা-মা আমাদের জন্য যেটা করতে পারেননি, তা প্রধানমন্ত্রী করেছেন। আমাদের মতো আশ্রয়হীনদের সরকারী খরচে মাথা গোজার ঠিকানা করে দেয়ায় আমরা শেখ হাসিনার কাছে চির কৃতজ্ঞ’।