সাতক্ষীরায় পুলিশের হাতে আটক মোটর চালিত ভ্যান, রিকসা ও ইজিবাইক ফেরত পাওয়ার দাবীতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালিত
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় পুলিশের হাতে আটক মোটর চালিত ভ্যান-রিক্সা ও ইজিবাইক ফেরত পাওয়ার দাবীতে অবস্থান কর্মসুচি পালিত হয়েছে। খেটে হতদরিদ্র এসব চালকরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে এ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন।
শহরের গড়েরকান্দা গ্রামের ভ্যান চালক সাহেব আলী বলেন, প্রতিদিন ভ্যানচালিয়ে সংসার চালাতে হয়। একদিন আয় না হলে চুলা জ¦লে না। একাধারে প্রায় ১মাস চলছে লকডাউন। ঘরে স্ত্রী, অসুস্থ্য মা ও সন্তান রয়েছে। যে কারণে পুলিশের ভয় উপেক্ষা করে গত ২৩ জুন বেরিয়ে ছিলাম। সেদিনই পুলিশ সাতক্ষীরা শহরের সংগীতা মোড় থেকে ভ্যানটি আটক করে। ভ্যানটি এখন পুলিশ লাইনে আটকানো রয়েছে। সে সময় পুলিশ ভাইদের অনেক অনুরোধ করেছিলাম, ছেড়ে দেন আর শহরে উঠবো না। তারা শোনেনি। এখন আয় তো করতে পারি না। ভ্যানটি ফেরত পাওয়ার আশায় প্রতিদিন সকালে পুলিশ লাইনের সামনে গিয়ে বসে থাকি। কিন্তু ভ্যানটি ছাড়াতে পারছি না।
একই কথা জানালেন শহরের কুখরালী গ্রামের ইজিবাইক চালক আবুল হোসেন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তার ইজিবাইকটি আটকানো রয়েছে। গত বছর লোন তুলে কিনেছিলাম ইজিবাইকটির এখনো টাকা পরিশোধ হয়নি। এরই মধ্যে লকডাউনে বিপাকে পড়েছিলাম। কয়েকদিন ধরে ভেতরের রাস্তায় চালিয়ে সংসার পরিচালনা করছিলাম। হটাৎ করে গত ২৫ জুন পুলিশ ইজিবাইকটি পুলিশ আটক করে। পেট তো আর লকডাউন বোঝে না। ঘরে একদিনেও বাজার নেই। গচ্ছিত কোন টাকাও নেই কি খাবো জানি না। আবার পুলিশ বলছে এগুলো আর ছাড়া হবে না। এখন আমাদের কান্না ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
গত কয়েকদিনে আটক হওয়ায় প্রায় অর্ধশত মোটরচালিত ভ্যান, রিক্সা ও ইজিবাইক চালকেরা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে হুটকরে এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে গরিব মানুষগুলোর সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, করোনাকালীন চলমান লকডাউনে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ তাদের কোন সাহায্য দিচ্ছেননা। এরই মধ্যে পুলিশ তাদের ভ্যান রিক্সা আটকে রাখায় তারা না খেয়ে জীবন যাপন করছেন। তারউপর তাদের ঋনের কিস্তিও টানতে হচ্ছে। তারা এ সময় অবিলম্বে তাদের ভ্যান-রিক্সা ছেড়ে দেয়ার আহবান জানান।
পরে তাদের অবস্থান কর্মসুচিতে এসে সাতক্ষীরার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির তাদের বক্তব্য শুনে বিষয়টি পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করে সমাধান করার আশ^স্ত করলে তারা তাদের অবস্থান কর্মসুচি প্রত্যাহার করেন।