বিশ্বের বৃহত্তম ‘হাসপাতাল জাহাজ’ যুক্ত হলো চিকিৎসায়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বিশ্বের বৃহত্তম বেসামরিক ‘হাসপাতাল জাহাজ’ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটি শিগগিরই চীনা একটি শিপইয়ার্ড থেকে ইউরোপের পথে যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে সুইডেনের মেরিন প্রশাসনের একটি মুখপত্র।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ‘মার্সি শিপস’-এর অনুরোধে সুইডেনের খ্যাতনামা শিপিং কম্পানি ‘স্টেনা-রোরো’ বিশ্বের বৃহত্তম নাগরিক-হাসপাতাল-জাহাজ ‘গ্লোবাল-মারসি’ তৈরি করছে।
গ্লোবাল-মারসি দ্বারা সংস্থাটি বিশ্বের হতদরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার সক্ষমতাকে দ্বিগুণ করবে। ভাসমান হাসপাতাল জাহাজটি ২০২২ সালে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছে দাতব্য সংস্থাটি।
এই জাহাজ হাসপাতাল সারাবিশ্বের মানুষ এবং সংস্থাকে একত্রিত করে জাতি, লিঙ্গ বা ধর্মকে ব্যাতিরেকে দরিদ্রদের জন্য আশা ও নিরাময়ের ভরসা নিয়ে আসবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক এই দাতব্য সংস্থা।
‘মার্সি-শিপস’ সাত বছর আগে জাহাজটি বানাতে অর্ডার দিয়েছিল সুইডেনের ‘স্টেনা ররো’ কোম্পানির কাছে। গ্লোবাল-মার্সি হাসপাতাল জাহাজের প্লানিং, নকশা এবং বাস্তবায়নের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব গ্রহণকারী কোম্পানি ‘স্টেনা ররো’ সুইডেনের বিশ্বখ্যাত স্টেনা এবির একটি ইন্টিগ্রেটেড বিভাগ।
‘স্টেনা ররো’ বিশ্বে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত জাহাজগুলির বিকাশে নেতৃস্থানীয় হিসেবে বিবেচিত। জাহাজটি মে মাসের প্রথমদিকে প্রথমবারের মতো পানিতে নামিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয় এবং বর্তমানে সেটি সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে হস্তান্তরযোগ্য করা হয়েছে।
চীনের তিয়ানজিনে হাসপাতাল জাহাজ ‘গ্লোবাল-মার্সির’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছিলেন ‘স্টেনা ররো’র সিইও প্যার ওয়েস্টলিং। তিনি১৭৪ মিটার দীর্ঘ হাসপাতাল জাহাজটিকে তুলনামূলক একটি যাত্রীবাহী এবং গাড়িবাহী জাহাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্যার ওয়েস্টলিং বলেন, অবয়বে গ্লোবাল-মার্সি একটি ক্রুজ জাহাজের মতই দেখতে- যেখানে একাধিক নাইট ক্লাব এবং বার থাকার কথা ছিল। এসবের পরিবর্তে রয়েছে সেখানে এক বিশাল হাসপাতাল। এ হাসপাতাল জাহাজে রয়েছে ছয়টি অপারেশন থিয়েটার এবং ৬০০ জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবীর থাকার জায়গা।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ‘মার্সি শিপস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ডন স্টিফেনস এ হাসপাতাল জাহাজ তৈরিতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হাসপাতাল জাহাজটি মার্সি-শিপসকে আফ্রিকায় পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে সহায়তা করতে সক্ষম হবে। এছাড়া জাহাজটি পুরো আফ্রিকা মহাদেশে নতুন চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতেও অবদান রাখবে।
জাহাজটিকে হাসপাতালের পূর্ণরূপ দিতে প্রথমে প্রয়োজনীয় মেশিন ও সরঞ্জামাদি ইন্সটল করা হবে। এ জন্য চীনা শিপইয়ার্ড থেকে যেতে হবে বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পে। এরপরে দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে ভেসে যাবে আফ্রিকার সেনেগালের দিকে।