প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক:

অভিষিক্ত ফুটবলার আলেজান্দ্রো দারিও গোমেজের গোলে প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা।

কোপা আমেরিকায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মেসিদের পরিসংখ্যান রীতিমতো অবিশ্বাস্য। চলতি আসর শুরুর আগে মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে প্যারাগুয়ের সঙ্গে খেলা ২২ ম্যাচের একটিতেও হারেনি আলবিসেলেস্তেরা।

ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার মানে গ্যারিঞ্চা স্টেডিয়ামে কোপার গ্রুপপর্বের ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে এবার সেই রেকর্ড ২৩-এ উন্নীত করলেন লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারা।

একইসঙ্গে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম দল হিসেবে নকআউট পর্ব নিশ্চিত হলো মেসিদের। এ জয়ের সুবাদে দুই বছর পর টানা দুই ম্যাচে ক্লিনশিট তথা নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে সক্ষম হলো লিওনেল স্কালানির দল। আগের ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা।

এর আগে ২০১৯ সালে পরপর দুই ম্যাচে চিলি ও মেক্সিকোর বিপক্ষে কোনো গোল হজম করেনি ১৪ বারের কোপা আমেরিকা জয়ীরা। মাঝের দুই বছরে আর টানা দুই ম্যাচে নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পারেনি তারা।

এছাড়া এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত রইলেন মেসিরা। সর্বশেষ ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল তারা। এরপর থেকে খেলা ১৬ ম্যাচে ৯ জয়ের পাশাপাশি ড্র হয়েছে বাকি ৭ ম্যাচ।

প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটিতে নিজেদের শুরুর একাদশে ছয় পরিবর্তন আনেন আর্জেন্টাইন কোচ স্কোলানি। প্রথমবারের মতো সার্জিও আগুয়েরো ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে নামান একসঙ্গে, ফরমেশন বদলে খেলান ৪-২-৩-১ এ।

যার সুফলও মেলে পুরো ম্যাচজুড়ে। শুরু থেকেই প্যারাগুয়ের রক্ষণভাগের কঠিন পরীক্ষা নিতে থাকেন ডি মারিয়া। তার এগিয়ে দেয়া পাস থেকেই দশম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন দারিও গোমেজ, যাকে মূলতঃ পাপু গোমেজ নামেই চেনে সবাই।

ডান পাশ থেকে ডি মারিয়ার থ্রু পাস বক্সের মধ্যে পেয়েই চিপ করেন অভিষিক্ত গোমেজ। তার ডান পায়ের দুর্দান্ত শটটি পরাস্ত করে প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক অ্যান্টোনি ডি সিলভাকে। এর মিনিট দুয়েক আগে অল্পের জন্য গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায় আগুয়েরোর শট।

প্রথমার্ধেই আরেকটি গোল পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। বিরতির বাঁশি বাজার ঠিক আগমুহূর্তে লেয়ান্দ্র পারেদেসের ক্রস থেকে নিজেদের জালেই বল ঢুকিয়েছিলেন প্যারাগুয়ের ডিফেন্ডার জুনিয়র আলোনসো। কিন্তু সেই আক্রমণ শুরুর সময় অফসাইডে ছিলেন মেসি। ফলে বাতিল হয়ে যায় গোল।

এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া আর্জেন্টিনা প্রথমার্ধেই সুযোগ তৈরি করেছিল বেশ কয়েকটি। বিশেষ করে ম্যাচের ১৮ মিনিটের সময় ডি-বক্সের বাম দিকে পাওয়া ফ্রি-কিকে জোরালো নিচু শট নেন অধিনায়ক মেসি। যা অল্পের জন্য বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট দিয়ে।

আর্জেন্টিনার একের পর এক আক্রমণের জবাবে রীতিমতো দিশেহারা অবস্থায় পড়ে যায় প্যারাগুয়ে। প্রথমার্ধে লক্ষ্য বরাবর একটি শটও করতে পারেনি তারা। এক্ষেত্রে অবশ্য বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য ক্রিশ্চিয়ানো রোমেরো, নিকোলাস তালিয়াফিকোদের নিয়ে সাজানো আর্জেন্টিনার রক্ষণের।

দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে স্কালোনির দল। কিন্তু সে অর্থে আক্রমণের ধার বাড়েনি। অন্যদিকে দ্বিতীয়ার্ধে প্যারাগুয়ে নামে গোল পরিশোধের মিশন নিয়ে। বেশ কিছু সাজানো আক্রমণে আর্জেন্টাইন রক্ষণে ভয় ঢুকিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেনি।

ম্যাচের শেষ দিকে লেয়ান্দ্র পারেদেস ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে উঠিয়ে নিকোলাস ডমিঙ্গেজ ও অ্যাঞ্জেল কোররেয়াকে নামান আর্জেন্টিনার কোচ। এতেও অবশ্য কোনো ফায়দা হয়নি। ম্যাচের দশম মিনিটে পাওয়া একমাত্র গোলের কল্যাণেই আসে চলতি কোপায় আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় জয়।

বি গ্রুপে তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান দখলের পাশাপাশি প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনা। শেষ ম্যাচ জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নকআউটের লড়াই শুরু করতে পারবে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে প্যারাগুয়ে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)