সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের শোক সভা থেকে শহীদ আলাউদ্দিনের খুনীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি
শোক, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শহীদ স ম আলাউদ্দীনের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা থেকে খুনীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানানো হয়। সোমবার (২১জুন) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা পলাশপোলস্থ সাংবাদিক ঐক্য কার্যালয়ে সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের মো: আবুল কাসেম। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের আমিনা বিলকিস ময়না।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এনটিভি ও যুগান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রথিতযশা সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক ও চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও শহীদ স ম আলাউদ্দীন তনয়া লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো’র সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী, দেশ টিভি ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা সাংবাদিক ঐক্য’র আহবায়ক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, দীপ্ত টিভির রঘুনাথ খাঁ, ডিবিসি চ্যানেলের এম জিললুর রহমান, দৈনিক পত্রদূতের বার্তা সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, দৈনিক সমাজের কাগজের আমিরুজ্জামান বাবু, বিশিষ্ট কবি ও লেখক সুদয় কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ নিউজ’র আব্দুস সামাদ, বাংলা ট্রিবিউনের আসাদুজ্জামান মধু, সূর্যের আলোর বার্তা সম্পাদক মুনসুর রহমান প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ স ম আলাউদ্দীনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, স ম আলাউদ্দীন ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একজন সাহসী যোদ্ধা, নির্ভেজাল দেশ প্রেমিক, শিক্ষা বান্ধব, শ্রমিক বান্ধব, ব্যবসায়ী বান্ধব দরদি মানুষ ছিলেন তিনি। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর নেতত্ব ছিল অত্যন্ত বলিষ্ঠ। অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁর আপোষহীন নেতৃত্ব অসহায় মানুষের মনে রুখে দাঁড়ানো সাহস যোগাতো। বক্তারা আরও বলেন, ২৫ বছরেও স ম আলাউদ্দীন হত্যার বিচার হয়নি। খুনীরা আজও ঘুরে বেড়ায়। খুনীদের সুরক্ষায় আজও বিশেষ মহল তৎপর। তাদের পোষ্য সাংবাদিকরা আজ সাংবাদিকদের বিভক্ত রেখে খুনীদের বাঁচাতে মরিয়া। স ম আলাউদ্দীন হত্যা মামলা নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান বক্তারা। বক্তারা আরও বলেন, গরীব-দুখী মানুষের সন্তানদের শিক্ষার জন্য তিনি গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজ। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর, চেম্বার অব কমার্স, আলাউদ্দীন ফুডস্ এন্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, আলাউদ্দীন বিস্কুট ফ্যাক্টরীসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছিলেন। সাতক্ষীরা বিনেরপোতায় বিসিক শিল্প নগরী ও কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় তার অবদান চির স্মরণীয়। সাধারণ মানুষের দু:খ, কষ্ট, আনন্দ, বেদনার কথা এক সুরে বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দৈনিক পত্রদূত। সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের পরিকল্পিত চিংড়ি চাষের সম্ভাবনাময় রূপরেখা তিনি প্রথম উত্থাপন করেছিলেন। চিংড়ি দ্রুত পরিবহণের জন্য সাতক্ষীরার বিনেরপোতায় হেলিপ্যাড স্থাপনের দাবিও তুলেছিলেন তিনি। তিনি বেঁচে থাকলে সাতক্ষীরা তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত হতো। সাতক্ষীরার সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরার মতো আজ নেতৃত্বের যে সংকট আলাউদ্দীন বেঁচে থাকলে এ সংকট থাকতো না। করোনা, জলাবদ্ধতা, বেড়িবাঁধসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত সাতক্ষীরা। এই সাতক্ষীরায় সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলার মতো নেতৃত্বের আকাল দেখা দিয়েছে। আলাউদ্দীন বেঁচে থাকলে এই আকাল থাকতো না। তাঁর চিন্তা, চেতনা, আদর্শ ও নীতি আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে সত্যিকারের দেশ প্রেমিক সুনাগরিক গড়ে তোলার এখনই সময়। এজন্য তাঁর জীবনের উপর বিভিন্ন লেখা সংগ্রহ ও প্রকাশ করে তা ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বস্তরে।