বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় আবার ভারি বৃষ্টি হলে তলিয়ে যায়
আশিকুজ্জামান লিমনঃ
শ্যামনগরের উপকূলীয় মানুষের পড়া কপাল বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় আবার ভারি বৃষ্টি হলে তলিয়ে যায় ৷ তীব্র খরায় খাবার পানির সংকট দেখা দেয় ৷ কিন্তু কি কপাল নিয়ে যে উপকূলে জন্ম হয়েছে! এটাই তাদের ক্ষোভ ৷ উপজেলা কর্মকর্তার বদলি হয়ে শ্যামনগরের আসলে খুবই খুশি হয় ৷ কারণ উপকূলবাসীদের দূর্দশা দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শহর হবে গ্রাম এই ভেবে একের পর এক বরাদ্দ দিয়েই আসছেন ৷ কিন্তু এই বরাদ্দ যায় কোথায়? সদ্য বদলী হওয়া জেলা প্রশাসক মহোদয় জনাব মোস্তফা কামাল সাতক্ষীরা জেলার সকল খালের বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে বলেছিলেন। কিন্ত তার ঐ ঘোষনা শুধু কি ঘোষনাই রয়ে গেছে? এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মধ্যে ৷ বিশেষ করে শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের বহুকাল ধরে ভূমিদস্যুদের দখলের কবলে পড়ে আছে হিমখালী ও ঝুরঝুরি খাল ৷ যা বন্দোবস্ত দেওয়ার কারনে ভেটখালী গ্রাম, বাজার, সোরা, তারনীপুর ও মানিকখালী বিলের পানি নিস্কাষনের আর কোন ব্যাবস্থা নেই। ভারি বৃষ্টি হলে সব তলিয়ে যায় ৷ এতো পানির চাপ থাকে যে ইটের সলিং, সিএমবি পানিতে ডুবে যায় ৷ প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে এই সময়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে প্রশাসন এসে নেট পাটা অপসারণ সহ উন্মুক্ত করার ছবি তুলে ফেসবুকে ভাইরাল করার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু পুনরায় খালগুলো আবারও দখল হয়ে যায় ৷
এই খাল ২টি বন্দোবস্ত বাতিল ও উম্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য দুই বছর আগে শত শত মানুষ স্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আবেদন করে ৷ উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যাবস্থা গ্রহনের আদেশ দিয়ে উক্ত আদেশটি কৈখালী ইউনিয়ন ভুমি অফিসে প্রেরণ করা হয় ৷ দীর্ঘ দুই বছর এই কাগজটি অফিসে পড়ে থাকলেও কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
অন্যদিকে গত বছর ২০২০ সালে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বরাবর এলকাবাসী লিখিত অভিযোগ দ্বায়ের করলে অভিযোগটির তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করা হয় ৷
কৈখালী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন এবং দীর্ঘ বছর যাবৎ ভূমিদস্যুরা বাড়িঘর সহ বিভিন্ন গাছ গাছালি লাগিয়ে রেখেছেন হিমখালী ও পোলের খাল দখল করে ৷ ফলে গাছগুলো অনেক বড় হয়ে যাওয়ার ফলে সেই গাছগুলো কাটা বাড়িঘর উচ্ছেদ করা সম্ভব না মর্মে একটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনা বরাবর ৷ উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জানান, উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি আলোচনা সভায় সরকারি খাস খাল উন্মুক্ত করে দেবেন এমন ধরনের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন ৷ চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন ৷ কিন্তু চেয়ারম্যান ভোটের আশায় বিষয়টি এড়িয়ে যান ৷ পরে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তাও এড়িয়ে যান ৷ এই ভাবে দীর্ঘ যাবৎ চলে আসছে ৷ সরকারি খাস খাল থাকলেও পানি নিষ্কাশনের অভাবে তলিয়ে যাচ্ছে ৷ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতি পরিবার ৷ অভাব দেখা দিচ্ছে পৌষা প্রাণীদের ৷
উপকূলী অঞ্চলের মানুষের দাবী সরকারি খাস খাল বন্দবস্ত বাতিল সহ জরুরী উন্মুক্ত করা হোক ৷
Please follow and like us: