চিত্রনায়িকা পরিমনির অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক:

নাসির ইউ মাহমুদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস পোস্ট করেন চিত্রনায়িকা পরিমনি। সেই স্ট্যাটাস আমলে নিয়ে অভিযোগের তদন্ত করছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা জানান, ফেসবুকে দেয়া পরীমনির স্ট্যাটাস পুলিশ সদর দফতরের নজরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে কাজ করছে পুলিশ।

এর আগে রোববার রাত ৯টার দিকে বনানীতে চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় যায় বনানী থানা পুলিশ। সেখানে গিয়ে ফেসবুকে দেয়া তার স্ট্যাটাসের বিষয়ে এবং তার করা অভিযোগের বিষয়টি শুনেছেন পুলিশ সদস্যরা।

পরীমনির অভিযোগগুলো শোনার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে লিখিতভাবে থানায় কোনো অভিযোগ করেননি পরীমনি।

এদিকে রাতেই সংবাদ সম্মেলনে ডাকেন পরিমনি। পরিমনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত বুধবার (৯ জুন) রাতে পরিচিত জেমির সঙ্গে উত্তরার বোট ক্লাবে যান। সেখানে নাসির উদ্দিনসহ চার-পাঁচজনকে টেবিলে বসে থাকতে দেখেন তিনি। তাদের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। টেবিলে দুটি মদের বোতল ছিল। পরীকে মদপানের প্রস্তাব দিলে তিনি তা নাকচ করেন। পরে তাকে কফি খেতে দেয়া হয়। কিন্তু সেই কফির স্বাদ ছিল অস্বাভাবিক। তাই তিনি কফি পান করেননি। এমনকি পরে দেয়া কোল্ড ড্রিংকসেও কিছু মেশানো হয়েছিল বলে মনে হয় তার। তিনি কোল্ড ড্রিংকসও পান করেননি। এতে ক্ষিপ্ত হন নাসির।

তিনি আরো জানান, তখন পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা জেমি ওয়াশরুমে যেতে চাইলে পরীকে যেতে বাধা দেয়া হয়। এমনকি পরীমনি ও জেমি বাসায় যেতে চাইলেও বাধা দেয়া হয়। নাসিরুদ্দিন পরীমনিকে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেন এবং মুখের মধ‌্যে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন। এতে তার দাঁতের মধ‌্যে আঘাত লাগে ও কিছু মদ গলার মধ‌্যে চলে যায়। এতে তার বুক জ্বালা করে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীমনি ও জেমি চিৎকার এবং কান্না করলে তাদের ধর্ষণ করার চেষ্টাসহ হুমকি এবং গালাগালি করা হয়।

এর আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন পরিমনি। তার স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘বরাবর,

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

এই বিচার কই চাইব আমি? কোথায় চাইব? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু বেনজির আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!

আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কি বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মত (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।

আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন! আমি তাদের মত চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোন অন্যায় মেনে নিতে! আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহুর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্যে দরকার।

আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্যে আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)