আশাশুনিতে আরও ১৪ জন করোনা পজেটিভ
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি:
করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউয়ের ছোবলে আশাশুনির সকল ইউনিয়ন এখন রোগিতে রোগিতে ভরতে শুরু করলেও সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায়ে তেমন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছেনা। প্রতিদিন রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আশাশুনিতে নতুন করে গত ৯ জুন ৪ জন ও ১০ জুন ১০ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, বুধবার (৯ জুন) উপজেলার ৪ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট সেছে। তারা হলেন, মমতাজ (৩৫) আশাশুনি সদর, মমতাজ (৬০) শোভনালী, বিনয় (৬০) খালিয়া ও রাশেদুজ্জামান (৫২) শ্রীউলা। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) পজেটিভ রিপোর্ট আসা ১০ জন হলেন, আবু হেনা (৬৫) আশাশুনি সদর, শরিফ হোসেন (৩৬) চাপড়া, নুরুন্নাহার (৩৬) চাপড়া, সাদিয়া (১৮) বুধহাটা, কওছার (৩৫) আগরদাড়ি, আনন্দ (৩১) রামনগর, শারমিন (৩৮) বুধহাটা, মোমেনা (৬০) শ্রীধরপুর, জিয়ারুল (৩০) শ্রীধরপুর ও জলিল (৬৫) বাওচাষ। এনিয়ে আশাশুনি উপজেলায় ১২৩ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৪১ জন গত বছরের এবং ৮২ জন চল ২য় ঢেউয়ে সংক্রমিত।
আশাশুনি উপজেলায় ১২৩ জন সংক্রমিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সংক্রমিত হয়েছে শোভনালী ইউনিয়নে এবং পরবর্তীতে আছে বুধহাটা ইউনিয়ন। শোভনালী ইউনিয়নে ২৯ জন, বুধহাটা ইউনিয়নে ২০ জন, কুল্যা ইউনিয়নে ৫ জন, দরগাহপুর ইউনিয়নে ২ জন, বড়দল ইউনিয়নে ২ জন, আশাশুনি সদরে ১১ জন, শ্রীউলা ইউনিয়নে ৪ জন, খাজরা ইউনিয়নে ২ জন, আনুলিয়া ইউনিয়নে ১ জন, প্রতাপনগর ইউনিয়নে ২ জন ও কাদাকাটি ইউনিয়নে ৪ জন।
করোনা উপসর্গ বা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে।
এলাকার ডাক্তারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতিদিন যে সব রোগি তাদের কাছে আসছে তার বেশীর ভাগই জ্বর-সর্দি-কাঁশি-গলা-গা-হাতপা ব্যথা তথা করোনা উপসর্গ নিয়ে আসছে। যাদেরকে নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছেনা বা তারা নিজেরাও সাধারণ জ্বর ভেবে টেস্ট করাচ্ছে না। তাছাড়া করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসা ও করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকাদের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করে বাইরের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, পরিবারের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে শৈথিল্যতা ও কড়াকড়ি তেমন নেই বলে এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছেন।
অপর দিকে দুঃখ জনক হলেও সত্য ২য় ধাপে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যুবরনকারীদের ব্যাপারেও তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। উপজেলার বাশারত হোসেন (৫৫), আঃ আলিম (৬০), সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ করোনা পজিটিভ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়া উজ্জল চৌকিদারের মা পার্বতী রানা রাহা (৬০), বাক্কার (৪৫), আনোয়ার খাতুন করোনা উপসর্গ নিয়ে ইন্তেকাল করেন। তাদের বাড়ি লাল পতাকা টানিয়ে লকডাউন করা, সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারিনটিনে রাখা ও পার্শ্ববর্তীদের সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও যথাযথ হয়নি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেকভাল করার জন্য সচেতনমহল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।