আশাশুনিতে করোনা পজেটিভ আরও ১৭ জন
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউয়ের ছোবলে আশাশুনির সকল ইউনিয়ন এখন রোগিতে রোগিতে ভরতে শুরু করলেও সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায়ে তেমন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছেনা। প্রতিদিন রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন করে গত ৭ জুন ১০ জন ও ৮ জুন ৭ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। করোনা উপসর্গ বা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। এলাকার ডাক্তারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতিদিন যে সব রোগি তাদের কাছে আসছে তার বেশীর ভাগই জ্বর-সর্দি-কাঁশি-গলা-গা-হাতপা ব্যথা তথা করোনা উপসর্গ নিয়ে আসছে। যাদেরকে নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছেনা বা তারা নিজেরাও সাধারণ জ্বর ভেবে টেস্ট করাচ্ছে না।
গত বছর (১ম ঢেউয়ে) আশাশুনি উপজেলায় ৪১ জন করোনা পজেটিভ হয়েছিল। যার অধিকাংশই ভিন্ন জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে আশাশুনিতে এসেছিল। এসময় মারা গিয়েছিল মাত্র ৩ জন। তাদেরকে কঠোর ভাবে হোম কোয়ারিন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
২য় ঢেউয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারত থেকে আগত রোগিদের আগমনের মধ্যদিয়ে আশাশুনিতে করোনা রোগির আবির্ভাব ঘটে। বর্তমানে উপজেলার সকল প্রান্তে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। ২য় ধাপে আশাশুনিতে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে (হাসপাতাল) ৬৮ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। সর্বমোট (১ম ও ২য় ধাপ) ১০৯ জন করোনা পজেটিভ এসেছে। সবশেষ নতুন করে ৭ জুন ১০ জনের ও ৮ জুন ৭ জনের মোট ১৭ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। শেষ দু’দিনে করোনা আক্রান্তরা হলেন, সমরেশ (৩০) পুইজালা, এরশাদ (৩৮) হাড়িভাঙ্গা, খুকুমনি (২৭) হাড়িভাঙ্গা, ইলিয়াছ (৩০) বড়দল, লাভলী (৪৫) গোদাড়া, জাহাঙ্গীর (৩৪) গুনাকরকাটি, রেজাউল (৫২) বুধহাটা, রনজিদা (২৫) কাদাকাটি, আঃ গফফার (৫৬) গদাইপুর, বাকী বিল্লাহ (৪০) গোদাড়া, মিনাজ (৬৫) গোদাড়া, রোজিনা (৩৬) গোদাড়া, ফতেমা (৫৫) গোদাড়া, শামছুন্নাহার (২৯) বুধহাটা, আবু ইছা (৪৩) নছিমাবাদ, বিধান (৪৫) কোদন্ডা ও আমিরুল (৪৫) গোদাড়া।
এসব হিসাবের বাইরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বহু রোগি করোনা উপস্বর্গ নিয়ে ২/৫ দিন থেকে ১০/১৫ দিন করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসাধীন আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেনা। এসব রোগির নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া এবং তাদেরকে হোম কোয়ারিনটিন নিশ্চিত করা দরকার। কেননা, তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেনা।
অপর দিকে দুঃখ জনক হলেও সত্য ২য় ধাপে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যুবরনকারীদের ব্যাপারেও তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। উপজেলার বাশারত হোসেন (৫৫), আঃ আলিম (৬০), সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ করোনা পজিটিভ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়া উজ্জল চৌকিদারের মা পার্বতী রানা রাহা (৬০), বাক্কার (৪৫), আনোয়ার খাতুন করোনা উপসর্গ নিয়ে ইন্তেকাল করেন। তাদের বাড়ি লাল পতাকা টানিয়ে লকডাউন করা, সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারিনটিনে রাখা ও পার্শ্ববর্তীদের সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও যথাযথ হচ্ছেনা।