দেবহাটায় ইউপি সদস্যের উপর হামলা ও লাঞ্চিতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি:
দেবহাটা উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি ইয়ামিন মোড়লের ওপর হামলা ও তাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের নাজিরের ঘের এলাকার বাসিন্দা ও ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। বুধবার সকাল ১০টার দিকে পারুলিয়া ব্রীজ সংলগ্ন পুরাতন যাত্রী ছাউনীর সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ইয়ামিন মোড়ল জানান, সোমবার ভোররাতে উত্তর সখিপুরের বর্তমান বাসিন্দা ও নাজিরের ঘের এলাকার আনছার মোড়লের ছেলে মনিরুল ইসলাম (৫৩) একটি মৎস্য ঘের থেকে মাছ চুরির সময় ঘের মালিকদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতনের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাতক্ষীরার একটি পত্রিকায় চোরের নাম মনিরুলের স্থলে ভুলবশত তার চাচতো ভাই কবিরুল মোড়লের নাম ছাপা হয়। ওই পত্রিকায় প্রকাশিত ভুল খবরটির পিছনে আমার ইন্ধন রয়েছে এমনটি সন্দেহ করে মাছ চোর মনিরুল, তার চাচতো ভাই কবিরুলসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
বুধবার সকালে পারুলিয়াতে অবস্থানকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মনিরুলের চাচা নাজিরের ঘের গ্রামের আলহাজ্ব মুনসুর উদ্দীন মোড়লের নির্দেশে চাচতো ভাই কবিরুল মোড়ল, ইসমাইল মোড়ল ও তাদের ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন বাবু আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা তাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিতও করেন বলে অভিযোগ ইয়ামিন মোড়লের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার ঘটনায় দুপক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে দেবহাটা থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এদিকে যে সংবাদটিকে কেন্দ্র করে এঘটনাটি ঘটেছে সেই পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক জানিয়েছেন, মুলত সখিপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের ফেসবুক আইডি থেকে মাছ চোরের নিউজটি সংগ্রহ করে পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছিল। নিউজটি কম্পোজের সময় চোরের নাম মনিরুলের স্থলে ভুলবশত কবিরুল হয়ে যায়। যা সম্পূর্ন অনাকাঙ্খিত। ওই নিউজের সাথে ইউপি সদস্য ইয়ামিন মোড়লের কোন সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অনাকাঙ্খিত এ ভুলের বিষয়টি পত্রিকায় ভ্রুন সংশোধনী আকারে প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের পক্ষে আলহাজ্ব মুনসুর উদ্দীন মোড়লের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে তুচ্ছ ঘটনায় ভুল বোঝাবুঝি’র জের হিসেবে ইউপি সদস্য ইয়ামিন মোড়লের সাথে আমার পরিবারের সদস্যদের বাকবিতন্ডতা ঘটে। বিষয়টি শীঘ্রই নিষ্পত্তি করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, সন্দেহের বশে ভুল বোঝাবুঝি থেকেই ইয়ামিন মোড়লের উপর হামলা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ঘরোয়া পরিবেশে বিষয়টি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, বিষয়টি শোনার পরপরই তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। এব্যাপারে এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি ওসি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।