শ্যামনগরে গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার:স্বামীসহ ছয়জনের নামে মামলা
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যৌতুকের দাবিতে এক অন্তঃস্বত্বা গৃহবধুকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেওয়ার অভিযোগে স্বামীসহ ছয়জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত গৃহবধুর বাবা খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বেদকাশি গ্রামের মোকছেদ শেখ বাদী হয়ে সোমবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক গোলাম আযম তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, নিহত গৃহবধুর স্বামী শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি গ্রামের মারুফ বিল্লাহ, শশুর মোস্তফা গাজী, শ্বাশুড়ি ফরিদা পারভিন, দেবর জিএম মহিবুল্লাহ, নোনদের স্বামী কয়রা উপজেলার বেদকাশি গ্রামের বাচ্চু ঢালী ও নোনদ আলেয়া বেগম।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দু’ বছর আগে খুলনার কয়রা উপজেলার বেদকাশি গ্রামের মোকছেদ শেখের মেয়ে সাদিয়া খাতুনের সঙ্গে শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে মারুফ বিল্লাহ’র বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্বামী মারুফ বিল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাদিয়াকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। এরই জের ধরে গত ১৫ মে সন্ধ্যায় অন্তঃস্বত্বা সাদিয়া বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর লাশের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রান্না ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেয় তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এঘটনায় তড়িঘড়ি করে নিহতের দেবর জিএম মহিবুল্লাহ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পরদিন খবর পেয়ে নিহতের বাবা মোকছেদ শেখ লাশ দেখার পর থানায় এজাহার দিলেও নতুন করে মামলা নেওয়া সম্ভব নয় বলে থানা থেকে জানিয়ে দেন। থানা মামলা না নেওয়ায় সোমবার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. অসীম কুমার মন্ডল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।