রাতে গলা কেটে হত্যা করে সকালে নিজেই গেলেন সংবাদ সংগ্রহে
নিউজ ডেস্ক:
বগুড়ায় মাদরাসায় গাঁজা সেবনে বাধা দেয়ায় নৈশপ্রহরী বৃদ্ধ জয়নাল আবেদীনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন গ্রেফতার কথিত সাংবাদিক তানভীরুল ইসলাম তানভীর।
শনিবার বিকেলে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও স্বীকারিক্তমূলক জবানবন্দি দেন তানভীর। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তানভীর জেলার শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামের এনামুল হক মিঠুর ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মাতৃভূমির খবর’র বগুড়া জেলা সংবাদদাতা। এছাড়া তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে পার্ট টাইম চাকরি করতেন।
নিহত জয়নাল একই গ্রামের মীর বক্তারের ছেলে। হত্যার ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন জয়নালের ছেলে আরিফুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, তানভীর পেশায় একজন সাংবাদিক। এক মাস আগে প্রেম করে গাবতলী উপজেলায় বিয়েও করেছেন। কিন্তু সংসারে অভাব থাকায় পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়। ঘটনার দিন বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে বেরিয়ে যান তিনি।
এরপর বাড়ির পাশে সুজাবাদ উত্তরপাড়া দাখিল মাদরাসার পকেট গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে একটি শ্রেণিকক্ষে গাঁজা সেবন করছিলেন। এ সময় নৈশপ্রহরী জয়নাল আবেদীন তাকে বাধা দেন। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তানভীরকে চড়-থাপ্পড় মারেন জয়নাল। রাগের বশে পকেটে থাকা ছুরি দিয়ে জয়নালের পেটে ও গলায় আঘাত করেন তানভীর। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এরপর পাশের পুকুরে ছুরিটি ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে যান।
পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে তানভীর নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সংগ্রহ করেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তাদের কয়েকজন মাদকসেবীর নাম দেন। এতে তদন্ত কর্মকর্তার সন্দেহ হলে কয়েকজন মাদকসেবীসহ তাকে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন তানভীর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাজাহানপুর থানার এসআই শামীম হোসেন বলেন, আটকের পর তানভীরসহ চারজনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে খুন করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তানভীর। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠান বিচারক।
বৃহস্পতিবার রাতে শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ উত্তরপাড়া দাখিল মাদরাসার একটি কক্ষে নৈশপ্রহরী জয়নাল আবেদীনকে গলা কেটে হত্যা করেন তানভীর। শুক্রবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।