ঘূর্ণিঝড় ইয়াস কেড়ে নিলো অসহায় বাঘ বিধবার শেষ সম্বল
আশিকুজ্জামান লিমন:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড উপকূলীয় এলাকা। সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদ চন্ডিপুর (চুনা) গ্রামের বাঘ বিধবা পারভিন আক্তার। স্বামী বদরুজ্জামান (বদু) গহীন সুন্দরবনের বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন এক যুগ পেরিয়ে গেছে। তিনটা কন্যা সন্তান নিয়ে স্বামীর ভিটাকে আঁকড়ে ধরে কোন রকম বেঁচে আছেন। গত ২৬শে মে (বুধবার) চুনা নদীর জোয়ারের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বেড়ীবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। বেড়ীবাঁধের উপর দিয়ে উপচে পড়া পানির স্রোত বাড়ির উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পারভীনের বসত বাড়ি, রান্না ঘর, গবাদি পশু হাঁস মুরগি আসবাবপত্রসহ সব কিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে রোজগার কৃত অর্থ দিয়ে সদ্য নির্মিত ঘরটিতে সন্তানদের নিয়ে বসবাসের ইচ্ছে ছিল তার। নিজের কষ্টে অর্জিত সহায় সম্বল হারিয়ে পাগলপ্রায় পারভীন বলেন, স্বামীকে বাঘে ধরেছিল ১৫ বছর আগে। এতিম ৩টা বাচ্চা নিয়ে স্বামীর ভিটাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে করেছিলাম কিন্তু আর শেষ রক্ষা হলনা। নিজের পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই। সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে আমার মৃত্যু হলনা কেন। নিজের কষ্টার্জিত গচ্ছিত অর্থ গুলো নিয়ে গেছে ঝড়ে কিভাবে নতুন ঘর তৈরি করব কাল থেকে না খেয়ে আছি। নিজের কাছে একটা টাকাও নেই বাজার ঘাট না করলে খাব কি। বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে রাতে কোথায় থাকবো কতদিনই বা অন্যের বাড়ি থাকবো। এমনটাই বলছিলেন পারভীন আক্তার দুচোখ দিয়ে অঝোরে ধরছিল বেদনার অশ্রু। প্রসঙ্গত ২৬শে মে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই পার্শ্ববর্তী মসজিদের দুই তলায় বসবাস করছে বাঘ বিধবা পারভীনসহ কয়েকটি পরিবার। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুমার মন্ডল জানান, ইতিমধ্যে এলাকাটি পরিদর্শন করেছি এবং পারভীনসহ বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাথমিকভাবে তাদেরকে ১০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে সরকারিভাবে যদি কোনো আর্থিক অনুদান আসে তাহলে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো অবশ্যই পাবে।
Please follow and like us: