আশাশুনিতে পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৩০টি গ্রাম,মাছের ঘের ও ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
আশাশুনি প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০টি পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও ওভারফ্লো হয়ে এ পর্যন্ত ৩০টি গ্রাম, ৩হাজার হেক্টর জমির মাছের ঘের, ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি ও ইটেরভাটা প্লাবিত হয়েছে।
এখনো ১৪টি পয়েন্টে ভাঙ্গন রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ায় নদীর পানির তোপে একের পর এক গ্রাম ও সম্পদ প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে।
গত বুধবার (২৬ মে) ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব নদ-নদীর উত্তাল পানি, হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া উপক‚লবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়লে দুপুর ১২ টার দিকে প্রতাপনগর ইউনিয়নের শ্রীপুর কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে দু’টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ওভারফ্লো হয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই
সেখানে ৩০০ ফুটমত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়।
এছাড়া হরিষখালী ৩টি পয়েন্টে, প্রতাপনগর সংলগ্ন
বন্যতলায় ২টি পয়েণ্টে, নাংলার একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়।
এ সময় অসংখ্য স্থান দিয়ে নদীর পানি ছাপিয়ে
লোকালয়ে প্রবেশ করে। নদীর পানি কুড়িকাহুনিয়া, চাকলা, সুভদ্রাকাটি, রুইয়ের বিল, হরিশখালি, সোনাতনকাটি, নাকনা, শ্রীপুর, গোকুলনগর, শির্ষা, একসরা গ্রাম জলমগ্ন করে। প্রতাপনগর ইউনিয়নে বর্তমানে যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি । এদিকে আশশুনি সদর ইউনিয়নের বোলাবাড়িয়া ৪টি পয়েন্ট দিয়ে বোলাবাড়িয়া,দূর্গাপুর সহ কয়েকটা গ্রামে জোয়ারভাটা চলছে । আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যার স ম সেলিম রেজা মিলন বলেন আমার ইউনিয়নে ৬টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে। আমরা স্থানিয়দের
সাথে নিয়ে ২টা পয়েন্ট আটকাতে সক্ষম হয়েছি। বাকি ৪টা পয়েন্ট দিয়ে বর্তমানে জোয়ার ভাটার পানি উঠা নামা করছে।
অপরদিকে বড়দল ইউনিয়নের বামনডাঙ্গায় গেট
সংলগ্ন উত্তর দিকে ৩টি পয়েন্টে ও দক্ষিণ দিকে টি
পয়েন্টে বাঁধভেঙ্গে বামনডাঙ্গা, তুয়ারডাঙ্গা, জামালনগর,ডুমুরপোতা, ফকরাবাদ, কেয়ারগাতি, মাদিয়া,মুরারীকাটি, কদমতলা, জেলপাতুয়া গ্রাম ও বিল প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে কাদাকাটি ইউনিয়নের তেতুলিয়া আদর্শ গ্রামের বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ করায় পুরো গ্রামের সকল ঘরবাড়ি জানালা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। আদর্শ গ্রামের এক শত ৪০টি পরিবার প্লাবিত হয়ে আশ্রয় হারা হয়ে পড়েছে। আদর্শ গ্রাম সংলগ্ন আরও ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি একই সাথে প্লাবিত হয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান দীপঙ্কর কুমার দিপ
একটি রিং বাধ দিয়ে ৩০টি পরিবারকে রক্ষার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) শাহীন সুলতানা আদর্শ গ্রাম পরিদর্শন করে কিভাবে তাদেরকে রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্থ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁন ও
পিআইও সোহাগ খান জানান, প্রত্যেক ইউনিয়নে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ এসেছে, এছাড়া ২০ মেঃ চাউল, এক লক্ষ টাকার শিশু খাদ্য ও এক লক্ষ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ হয়েছে।