ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর পূর্ব মূহুর্তে নদীর পানি বৃদ্ধি, বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন, কোস্ট গার্ডের তৎপরতা অব্যাহত

শ্যামনগর প্রতিনিধি:
শ্যামনগরের উপকুল জুড়ে সুপার সাইক্লোন ইয়াস আগামনী বার্তায় আতঙ্ক গ্রস্থ হয়ে পড়েছে উপক‚লীয় মানুষ। শ্যামনগর উপজেলা প্রশানের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সুন্দরবন উপকুলীয় এলাকার নদীর পানি ২/৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলার গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনী, রমজাননগর ও কৈখালী ইউনিয়নে ১২/১৪ স্থানে বেড়ি বাধ ছাপিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে এবং মুন্সিগঞ্জ ও কৈখালী ২ টি স্থানে বেড়ি বাধ ভেঙ্গে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। অপরদিকে কোস্ট গার্ডের কৈখালী ক্যাম্প কমান্ডার লেঃ আতাহার হোসেনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম দুর্যোগ কবলিত মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০ টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার এলাকায় টহল অব্যহত রেখেছে। লোঃ কমান্ডার আতাহার হোসেন বলেন, ইয়াস পরবর্তী সময়ে মানুষকে সু-চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম কাজ করবে এবং অসহায় পরিবারের মধ্যে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এছাড়া দুর্গত এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা প্রদান করছে। মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আবুল কাশেম মোড়ল জানান, তার ইউনিয়নে ৫/৬ স্থানে বেড়ি বাধ ছাপিয়ে নদীর পানি ভিতরে প্রবেশ করেছে এবং সিংহড় তলি ভোলার বাড়ির সামনে ৫/৬ হাত বেড়ি বাধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। এসময় নদীতে ভাটা প্রবাহিত হওয়ায় এলাকায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। সাথে সাথে স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে বাধে মাটি দেওয়া হয়েছে। রাত্রে ও সেখানে লাইট জ্বালিয়ে কাজ করা হবে। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মাছুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়টি একটি দ্বিপ অ ল। ইউনিয়নের ৫/৬ জায়গায় বেড়ি বাধ ছাপিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। বর্তমানে স্বোচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সেখানে বাধে মাটি দিয়ে উঁচু করা হচ্ছে। রমজাননগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন জানান, তার ইউনিয়নে জ্জ স্থানে বেড়ি বাধ ছাপিয়ে পানি লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। সেসকল স্থানে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মাটি দিয়ে উচু করা হচ্ছে। কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, তার ইউনিয়নে বেড়ি বাধ অনেক স্থানই ঝুকিপূর্ন। ৩ টি স্থানে নদীর পানি বেড়ি বাধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। বাধ সংলগ্ন বসতিরা আতঙ্কে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান জানান, আইলা, সিডর, বুলবুল, আম্ফান ঘূর্নিঝড় প্রবাহিত হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপক‚লীয় টেকসই বেড়ি বাধ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও অদ্যবধি তা করা হয়নি। আমার ইউনিয়নে পানখালি চুনা নামক স্থানে নদীর পানি বেড়ি বাধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। সেখানে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মাটি ফেলা হচ্ছে। শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশনাল অফিসার মাসুদ রানা জানান, উপজেলার সুন্দরবন উপক‚লীয় এলাকার ঝুকিপূর্ন বেড়ি বাধ গুলো স্থানীয় সহযোগিতায় মেরামতের কাজ অব্যহত আছে। শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনম আবুজর গিফারী বলেন, বিভিন্ন ঝুকিপূর্ন স্থান পরিদর্শন করে আতঙ্কগ্রস্থ সকল মানুষকে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমানে উপকূলীয় মানুষ আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। গাবুরা এলাকার আলহাজ্ব মুনসুর মালী জানান, দিনের জোয়ারের চেয়ে রাতের জোয়ার আরও বৃদ্ধি পাবে। রাতের জোয়ারে এবং ২৬ মে বুধবার জোয়ারের পানি আরও বৃদ্ধি সুন্দরবন উপক‚লীয় সব কয়টি ইউনিয়নের মানুষ নদীর পানিতে হাবুডুবু খাবে এবং জান মালের ব্যাপিক ক্ষতি হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)