ধেয়ে আসছে যশঃসতর্ক অবস্থায় উপকূলীয় বাগেরহাট
নিউজ ডেস্কঃ
বঙ্গোপসাগরের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বুধবার (২৬ মে) সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ইয়াস মোকাবিলায় ইতিমধ্যে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সব কমিটির সভা অব্যাহত রয়েছে।
বাগেরহাটের চারটি উপজেলা মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপকূলে অবস্থিত হওয়ায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে এসব উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী।
চারটি উপজেলায় নিয়োজিত থাকবে ৪৬টি মেডিকেল টিম। পাশাপাশি ইয়াস মোকাবিলায় মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় বাগেরহাট রেড ক্রিসেন্টের ৩ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।
বাগেরহাট রেড ক্রিসেন্টের ইউনিট প্রধান এ এস এম গোলাম কবির বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা মাঠে থেকে কাজ করেন। আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় বাগেরহাট রেড ক্রিসেন্টের তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে সভা চলছে। ঝড় সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খুলে দিয়ে প্রয়োজনীয় আলো ও পানির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতেও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির ইয়াস মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জেলার সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক বলেন, মোরেলগঞ্জ, শরণখেলা, মোংলা, ও রামপাল উপজেলাকে অধিক সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এসব উপজেলায় জারের মাধ্যমে সুপেয় পানি, শুকনা খাবার ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় মালামাল সংরক্ষণ করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত করা হয়েছে।সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থা, জনপ্রতিনিধিসহ সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ইয়াস মোকাবিলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ২৬ মে নাগাদ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছাতে পারে।